দিল্লির হিংসা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন কমিশনার

দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশে সংঘর্ষের পর। (File Photo by Sajjad HUSSAIN / AFP)

শনিবার শুরু হয় দিল্লিতে সিএএ সমর্থক ও বিরােধী পক্ষের সংঘর্ষ। এরপর বুধবার পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয় যে রাজধানীতে সেনা নামানাের পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

এদিকে দিল্লিতে হিংসা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি পুলিশেরই প্রাক্তন কমিশনার নীরজ কুমার। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ যেভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে তাতে আমি খুশি নই।’

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও নীরজ অবশ্য দাবি করেন যে দিল্লিতে সেনা নামানাের মতাে পরিস্থিতি আসেনি। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই মুহুর্তে যা পরিস্থিতি তাতে সেনা নামানাের প্রয়ােজন নেই। শেষবার দিল্লিতে ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গার সময় সেনা নামানাে হয়েছিল। তবে এখনও পরিস্থিতি ততটা বাজে হয়নি।’ এই কথা বলেও পুলিশের নেতৃত্বহীনতার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘দিল্লি পুলিশে সব পর্যায়ই এখন নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে। এই কারণেই দিল্লিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ।’


দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পরামর্শ হিসাবে নীরজ বলেন, ‘দুষ্কৃতীরা যেই হােক তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিৎ। অশান্তি ঠেকাতে আরও প্রতিরােধমূলক গ্রেফতার করতে হবে। দাঙ্গাকারীদের উস্কে দেওয়া লােকদেরও গ্রেফতার করতে হবে। দাঙ্গা রুখতে কোনও রাজনৈতিক নির্দেশ প্রয়ােজন পরে না।’

শনিবার রাতে শুরু হওয়া অশান্তির আগুন দিল্লিতে জ্বলেছে বুধবারও। শনিবারের পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার আগুন আরও জ্বলে উঠছে দিল্লিতে। এদিকে বুধবার নতুন করে হিংসার আগুনে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে দিল্লিতে। গত তিন দিনের হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে অশান্ত এলাকায় খবর সংগ্রহে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রােষের সামনে পড়েছেন সাংবাদিকরাও। জানা যায় মঙ্গলবার এক সাংবাদিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। জখম অবস্থায় পরে সেই সাংবাদিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে দিল্লি হিংসায় মৃতদের সিংহভাগই পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিজের প্রাণ হারিয়েছেন। চলমান হিংসার সঙ্গে এদের কোনও যােগ নেই। তবে দিল্লির এই অশান্তি যে কতটা ভয়াবহ আকার নিয়েছে তা জানা যায় এটা থেকেই যে হিংসায় প্রাণ হারানােদের মধ্যে যেমন রয়েছে এক পুলিশ কনস্টেবল ও আইনজিবি, অফিসার, তেমনই মৃতদের মধ্যে রয়েছে সদ্য বিবাহিত এক ব্যক্তি, একজন ডিজে, এক ব্যবসায়ী, একজন বাবা যে তাঁর সন্তানদের জন্য টফি কিনতে বেরিয়েছিলেন।

এদিকে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না দিল্লিতে। এই গােষ্ঠী সংঘর্যের মধ্যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্পেশাল সেল, ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার (ইডাব্লু) তরফ থেকে প্রায় কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মােতায়েন করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেওয়া হয় শুট অ্যাট সাইটের নির্দেশ। বিশেষ পুলিশ কমিশনার পদে নিয়ােগ করা হয় এসএন শ্রীবাস্তবকে।