প্রতিবেশী দেশ চিনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিয়ে বোঝাপড়া ভারতই করবে। এই বিষয়ে অন্য কোনও দেশের নাক গলানোর প্রয়োজন নেই। একথা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরামর্শ দেন, প্রয়োজনে ভারত ও চিনের সীমান্ত-সমস্যা মেটাতে আমেরিকা মধ্যস্থতা করতে পারে। দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা ঘিরে সংঘাতের সম্ভাবনা দূর করতেই বৃহস্পতিবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রক সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়।
১৪ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প এবং মোদীর বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ট্রাম্প ভারত ও চিনের মধ্যে তৈরি হওয়া শীতল সম্পর্কের সমাধানে মধ্যস্থতা করতে চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘চিন বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি মনে করি চিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো হতে চলেছে। কোভিডের আগে পর্যন্ত আমার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট শি-র নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।’
মোদীকে সম্বোধন করে ট্রাম্প বলেন, ‘এ বার আমি ভারতের প্রসঙ্গে আসছি।’ ট্রাম্প বলেন, ‘আমি দেখেছি, সীমান্তে গোলমাল চলছে। সেগুলি বিদ্বেষপূর্ণও বটে। আমার মনে হয়, এভাবেই চলতে থাকবে। এই ঝামেলা মেটাতে আমি যদি কোনওভাবে কাজে লাগতে পারি তাহলে আমার ভাল লাগবে।’
প্রধানমন্ত্রী মোদী সরাসরি তখন ট্রাম্পের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলেননি। তবে বিদেশ মন্ত্রক শুক্রবার নাম না করে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব কার্যত খারিজ করেছে। সমাজ মাধ্যমে বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রীর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য— ‘যে কোনও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের যে সমস্যাই থাকুক না কেন, আমরা সব সময়ই তার সমাধানের জন্য দ্বিপাক্ষিক উপায়ে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ভারত ও চিনের ক্ষেত্রেও বিষয়টি আলাদা নয়। আমরা এই পদ্ধতি চালিয়ে যাব।’ ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতেই মিস্রীর ওই মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, বিশ্বের দরবারে চিনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তাঁর মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বেজিং ভূমিকা নিতে পারে। পাশাপাশি তিনি চিন, রাশিয়া, এবং আমেরিকার সহযোগিতার গুরুত্বের উপরও জোর দেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আশা করি , চিন, রাশিয়া, ভারত, এবং আমেরিকা – আমরা সবাই একসঙ্গে চলতে পারি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফর শেষে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানান, ভারত সবসময় দ্বিপাক্ষিক উপায়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে। বরাবরই ভারত সরকার এই অবস্থানে অচল থেকেছে। ফলে অন্য কোনও দেশের সঙ্গে সমঝোতায় তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতা চায় না ভারত।