পাকিস্তানকে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার হুমকি দিল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক । ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে স্বাভাবিক প্রতিবেশীর মতাে আচরণ করা শিখতে হবে। কারণ পাকিস্তানের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিরা কাশ্মীর ইস্যুকে সামনে রেখে ভারতে জেহাদি কার্যকলাপ ঘটানাের হুমকি দিচ্ছেন।
পাকিস্তানি নেতাদের মনে রাখতে হবে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং এটি সম্পূর্ণ এক অভ্যন্তরীণ বিষয় সেখানে পাকিস্তানের কোনও মাথা ব্যথার কারণ থাকতে পারে না। অযথা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীরাও কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
সােমবার ইমরান খান কাশ্মীর ইস্যু রাষ্ট্রসংঘ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জানাবেন বলে বিবৃতি দেন।
২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে পাঠানকোটে বিমানবাহিনীর এক ঘাঁটিতে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে আলােচনা বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ হিসেবে ভারত বলেছে, আলােচনা ও জঙ্গি আক্রমণ একই সঙ্গে চলতে পারে না। একইভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের নৌবাহিনীর কমান্ডােদের কাচ খাঁড়িতে অনুপ্রবেশের খবর ভারতীয় গােয়েন্দাদের কাছে রয়েছে।
পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি দলগুলির বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ আন্তর্জাতিক শর্ত অনুযায়ী বাধ্যতামূলক। পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে নাশকতা চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। ভারতের কাছে এমন জঙ্গি নাশকতার ছক সম্পর্কে সব খবর রয়েছে।
পাকিস্তান যদি তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তার পরিণতি যে ভাল হবে না তা তাদের জানা আছে। পাকিস্তানের মাটি থেকে ভারতে নাশকতা চালানাের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের শায়েস্তা করার দায়িত্ব পাকিস্তানের বলে মন্তব্য করেছেন কুমার।
রবিশ কুমার কাশ্মীর উপত্যকায় অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়ে প্রধান অন্তরায় হিসেবে পাকিস্তানি নেতাদের বক্তব্যকেই দায়ী করেছেন। তারা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে অযথা মিথ্যা রটাচ্ছে। ভারত যদিও পাকিস্তানের এহেন মিথ্যা অভিযােগের কোনও উত্তর দিতে রাজি নয়, কিন্তু পাকিস্তানের বিভ্রান্তিকর বিবৃতির বিরুদ্ধে অন্যান্য দেশগুলিকে সােচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারত।
পাকিস্তানের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মহম্মদ ফৈজল তার সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযােগ করেন, পাকিস্তান সকল সময়েই কাশ্মীর ইস্য দ্বিপাক্ষিক আলােচনার মাধ্যমে সমাধান করতে আগ্রহী কিন্তু ভারতের পক্ষে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টে ভারত রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাব অমান্য করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার বিলােপের বিষয়ে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে রবিশ কুমার অভিযােগ করেছেন।
ভারত বারবার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে জানিয়েছে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলােপ সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং পাকিস্তানকে এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে সম্প্রতি পাকিস্তানের বন্ধুরাষ্ট্র চিনও ইউএনএসসি’র এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যু দ্বিপাক্ষিক আলােচনার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়ে সহমত পােষণ করেছে।