সোমবারের পর শুক্রবার, ফের শনিবার। পরপর তিনবার বোমা হামলার হুমকি। নিশানায় দিল্লির একাধিক স্কুল। ই-মেল মারফত এই হুমকি দেওয়া হচ্ছে বারবার। যার জেরে রাজধানীতে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার তৃতীয়বার হুমকি বার্তা পেয়ে পুলিশ স্কুলগুলিতে শুরু করে তল্লাশি অভিযান। কিন্তু কোনও স্কুলে কোনও বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া যায়নি।
শনিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ আর কে পুরম এলাকার দিল্লি পাবলিক স্কুলে বোমা রাখার উড়ো খবর আসে। তারপর রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলেও বোমা রাখার ভুয়ো খবর ছড়ায় দুষ্কৃতীরা। তারপর দমকল বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশি অভিযান শুরু করে দিল্লি পুলিশ। আনা হয় স্পেশাল ডগ স্কোয়াড। তবে কোনও বোমার হদিশ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এই বোমাতঙ্ক ছড়ানোর পিছনে ব্যারি আল্লা নামে এক ব্যক্তির মেল আইডি চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাঁর মেল আইডি থেকেই এই হুমকি মেলগুলি ছড়ানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে ওই মেলে লেখা হয়, ‘আল্লা দেখছেন তোমরা কীভাবে তাঁর শাস্তি এড়ানোর চেষ্টা করছ। কিন্তু কোনও মানুষ আল্লাকে এড়াতে পারে না।’
শনিবার সকালে দিল্লির বেশ কয়েকটি স্কুলে ই-মেলে বোমা হামলার হুমকি বার্তা পাঠিয়ে বলা হয়, আমাদের লক্ষ্যকে কেউ টলাতে পারবে না। পাপ করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। বোমায় উড়ে যাবে সমস্ত স্কুল। আজ শুধুই আগুন জ্বলবে। এই মর্মে স্কুলগুলিতে হুমকি বার্তা পাঠানোর পরই তৎপর হয়ে ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল এবং বম্ব স্কোয়াড। তবে তল্লাশি চালিয়েও এখনও পর্যন্ত কোনও বোমা বা বিস্ফোরক পদার্থ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারও দিল্লিতে ৩০টির বেশি স্কুলে বোমা হামলার হুমকি ই-মেল পাঠানো হয়। ওই ই-মেলে দাবি করা হয়, স্কুল চত্বরে একাধিক জায়গায় বিস্ফোরক রাখা হয়েছে। পূর্ব কৈলাশের দিল্লি পাবলিক স্কুল, সালওয়ান স্কুল, মডার্ন স্কুল, কেম্ব্রিজ স্কুল-সহ ছটি স্কুলে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি অভিভাবকদের মেসেজ করা হয়, তাঁরা যেন ছেলেমেয়েদের আপাতত স্কুলে না পাঠায়। একটি সিক্রেট ডার্ক ওয়েব চক্র এই ঘটনার নেপথ্যে যুক্ত রয়েছে বলেও ই-মেলে উল্লেখ করা হয়েছে। খবর পেয়ে স্কুলগুলিতে পৌঁছয় পুলিশ, বম্ব স্কোয়াড, স্নিফার ডগ এবং অ্যাম্বুল্যান্স। তবে বেশ কয়েক ঘণ্টা তাল্লাশির পরও কোনও বোমার হদিশ পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর ৪৪টি স্কুলে ই-মেল পাঠিয়ে একইভাবে হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। তবে সেবারেও স্কুলগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই আরও একবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। যার জেরে অপরাধমূলক অভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দিল্লি পুলিশ। গত মে মাসেও প্রায় আড়াইশোটি স্কুল, হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে একইরকম হুমকি মেল এসেছিল। সেই ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি। দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির ডিসিপি রবি সিং বলেন, এদিনের ঘটনায় চিরুনি তল্লাশির পরও কিছু মেলেনি। তবে জানা গিয়েছে যে, বিদেশ থেকে ওই মেল এসেছে। কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছে, সে ব্যাপারে তদন্ত চালানো হচ্ছে।