কংগ্রেস নেতা তথা তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর ফের সরকারের আনা নতুন নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনকে তোপ দাগলেন। রবিবার শশী বলেন, ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে এই প্রথমবার ধর্মের ভিত্তিতে পরীক্ষা আনা হয়েছে। তিনি আরও অভিযােগ করেন, ‘এই নাগরিকত্ব আইনের মূল অসুবিধা হল, এটি নৈতিকভাবে ভুল’।
রবিবার কংগ্রেস সাংসদ জেএনইউ’তে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে দেখা কনে। সেখানেই শশী থারুর সরকারকে তােপ দেগে বলেন, ‘এর আগে কখনও এরকম হয়নি যে ভারতীয় হতে গেলে কাউকে নিজের ধর্মের পরীক্ষা দিতে হত। কখনও হয়নি যে নিজের ধর্ম দেখিয়ে এই দেশের নাগরিকত্ব নিতে হয়েছে কাউকে’।
এরপর ৫ জানুয়ারি জেএনইউ ক্যাম্পাসে হওয়া তাণ্ডবের সমালােচনায় মুখর হয়ে তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারি জেএনইউ’তে যা হয়েছে তা ক্ষমার অযােগ্য। একজন অভিভাবক হয়ে আমি ক্ষুব্ধ এটা দেখে যে সেই ঘটনায় ছাত্রদের উপর কিরকম অত্যাচার চালানাে হয়েছে। মুখােশধারী গুন্ডারা যেভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালায় তা থামানাের চেষ্টাও করেনি পুলিশ। তারা গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিল। এই অপেক্ষাটা যদি ওরা ১৫ ডিসেম্বর জামিয়ার ক্ষেত্রেও করত তবে কাজে দিত। তবে এই ক্ষেত্রে পুলিশ শুধু দাঁড়িয়ে থেকে তাণ্ডব দেখেছে।
এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে শনিবার জেএনইউ’তে হামলাকারী ৩৭ জনকে চিহ্নিত করে দিল্লি পুলিশ। এরা সকলেই ‘ইউনিটি আগেনস্ট লেফট’ নামক একটি হােয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। এঁদের মধ্যে ১০ জন বহিরাগত আছে বলেও জানায় দিল্লি পুলিশ। এবং জেএনইউ ছাত্রদের একাংশই সেই বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে সাহায্য করে বলেও জানায় পুলিশ।
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিল জেএনইউ। সেই রেশেই রবিবার সন্ধে ছটা নাগাদ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন জেএনইউ’এর টিচার্স অ্যাসােসিয়েশন। সেখানেই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশকে ডাকা হলে ক্যাম্পাসে আসে প্রায় ৭০০ পুলিশকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সাড়ে সাতটা নাগাদ। যদিও তাণ্ডব তখনও চলছে। অভিযােগ উঠেছে পুলিশের সামনে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙ হলেও পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। শুধু মাঝে মাঝে একজন দু’জনকে পুলিশ আটকাচ্ছিল। তবে তারা কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি।
এদিকে ঘটনায় জখম হয়ে এইমস’এ ভর্তি হয় ৩৪ জন ছাত্র ও শিক্ষক। তাদের মধ্যে ঐশী ঘােষের মাথায় ১৫টি সেলাই পড়েছে। তবে অশান্তি ছড়ানাের দায়ে তারই বিরুদ্ধে এবার অভিযােগ দায়ের করল দিল্লি পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযােগ ছিল যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার রুমে ভাঙচুর চালিয়েছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শশী রবিবার বলেন, ‘এই ঘটনার সব থেকে খারাপ দিক হল এটা একজন ইতিহাসের ছাত্র হিসাবে নাৎজি জার্মানির কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই সময়ও ক্ষমতাশীন দলের যুব শাখা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে এরকম তাণ্ডব চালাত।