বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি অসমে , ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ লক্ষ মানুষ 

গুয়াহাটি, ৬ জুলাই –  বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে অসমে। গত ২৪ ঘণ্টায়  আরও দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন।  মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে  ৫২। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০টি জেলার ২৫ লক্ষের বেশি মানুষ, এমনটাই খবর প্রশাসন সূত্রে। জলের তলায় ডুবে রয়েছে বহু গ্রাম।  কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের পরিস্থিতিও দুর্বিষহ। জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৭০ শতাংশ জমি জলমগ্ন । আতঙ্কে উদ্যান ছেড়ে পালাচ্ছে পশুরা। সরকারি হিসাব বলছে, কাজিরাঙায় চলতি মরসুমে গন্ডার, হরিণ-সহ ৭৭টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ৬২টি হগ ডিয়ার। কমলা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, লাগাতার বৃষ্টির জেরে ব্রহ্মপুত্র-সহ তার উপনদীগুলি , একাধিক বড় নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। রাজ্যের ৩০টি জেলার ৩৬১৮ টি গ্রাম বন্যায় তলিয়ে গেছে। ২৪,২২ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।  কামরূপ, করিমগঞ্জ, ধুবড়ি, ডিব্রুগড়, কাছাড়, তিনসুকিয়া, লখিমপুর, মরিগাঁও জেলাগুলি বন্যা কবলিত। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে  চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে বহু ফসল।
 

এখনও পর্যন্ত ৪৭ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করে ত্রাণশিবিরে পাঠানো গিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। এখনও হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া।

রাজ্যের শহরাঞ্চলগুলিও গত ৯ দিন ধরে জলের তলায়। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা ডিব্রুগড়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিতে পরিস্থিতির তত্ত্বাবধানের জন্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করা হয়েছে। ত্রানের কাজে তৎপরতা আরও জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

কাজিরাঙা উদ্যানে ১৫ হাজারেরও বেশি পশু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ৯৪টি পশুকে। তার মধ্যে ৫০টিকে নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ১১টি পশুর চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে।


বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসমের রাস্তাঘাট, সেতু এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ। এদিকে আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতর ৯ জুলাই পর্যন্ত অসমের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।