আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ ৭ শতাংশে ঠেকলেও চাকরি সৃষ্টিতে শঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা
দিল্লি, ৭ জুলাই– মোদি ৩.০ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হতে চলেছে চলতি মাসেই৷ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের হাত ধরেই ফের প্রকাশ পাবে এই বাজেট৷ সরকারিভাবে দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও, মনে করা হচ্ছে ২৩ বা ২৪ জুলাই ২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণা করবেন তিনি৷ নতুন সরকার তার নতুন বাজেটে জনগণের জন্য কী কী সুবিধা ঘোষণা করতে পারেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে গোটা দেশ৷ এই ঘোষণাগুলির মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা বৃদ্ধিকে৷
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বেতনভুক ব্যক্তিদের জন্য একটি ফ্ল্যাট ডিডাকশন৷ এই কর ছাড় দাবি করতে কারও কাছে কোনও প্রমাণ জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না৷ সরকারি-বেসরকারি সব ক্ষেত্রের কর্মীরা এই ছাড় পেয়ে থাকেন৷ ২০২২-’২৩ আর্থিক বছর পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন পুরনো কর ব্যবস্থার অধীনে ছিল৷ তবে ২০২৩-’২৪ থেকে তা নতুন কর ব্যবস্থাতেও যুক্ত হয়েছে৷
সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত, এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা বাডি়য়ে একলক্ষ টাকা করতে পারেন৷
কংগ্রেসসহ বিরোধীদের অনেকেই যখন জাতিভিত্তিক জনগণনার পক্ষে গলা চড়াচ্ছে, তখন চাকরিক্ষেত্রের ছবিটি অত্যন্ত করুণ৷ ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ ৭ শতাংশে ঠেকলেও তাতে মোটেও খুশি নন বিশেষজ্ঞরা কারণ তারা বলছেন কত চাকরি সৃষ্টি করার সমস্যার থেকেও গুরুতর বিষয় হচ্ছে ‘কী ধরনের চাকরি’ তৈরি করা যাবে? যাকে বিশেষজ্ঞরা সমস্যার অন্দরের সমস্যা বলে বর্ণনা করেছেন৷
৭ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হিসাব ধরলেও বছরে ৮০-৯০ লক্ষ চাকরির লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে৷ কিন্ত্ত তাতে ক্রমবর্ধমান বেকারিতে রাশ টানা অসম্ভব৷ এবারের বাজেটে সেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে নির্মলাকে৷
শুধু তাই নয়, কী ধরনের কর্মক্ষেত্র তৈরি করা যাবে তার উপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু৷ যেমন, সরকারি তথ্য বলছে, আনুমানিক ৪৬ শতাংশ মানবসম্পদ এখনও কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত৷ যা থেকে জাতীয় গড় উৎপাদনের ২০ শতাংশ আসে৷ উৎপাদন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান হয় মাত্র ১১.৪ শতাংশ৷ কোভিডের পর থেকে যার পরিমাণ গতবছর পর্যন্ত কমছে৷
বেতনভুকদের জন্য প্রতিবছর ৪০ হাজার টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ২০১৮-র বাজেটে ফিরিয়ে আনা হয়৷ পরে ২০১৯-এর অন্তর্বর্তী বাজেটে সেই সীমা বাডি়য়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়৷ তার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্ট্যান্ডার্ড ডিটাকশন বাড়ানোর দাবি উঠেছে৷ কিন্ত্ত সেই দাবি মানেননি সীতারমন৷ শুধু বেতন থেকেই নয়, পেনশন থেকে আয়েও স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন পাওয়া যায়৷ সেখানে শর্ত থাকে প্রাপ্ত পেনশন বেতন থেকে আয় শিরোনামে চার্জযোগ্য৷ যা অন্য উৎস থেকে আয়ে অধীনে নয়৷ পেনশন প্রাপকের মৃতু্যর পরে যদি তা পারিবারিক পেনশন হয়, তাহলে সেই প্রাপক যে টাকা পান, তা অন্য উৎস থেকে আয় শিরোনামে চার্জ যোগ্য৷ স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনে আরও উপকারী করতে এবং সঞ্চয়ে সাহায্য করতে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বৃদ্ধি করা উচিত বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ সেই কারণে সরকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়াতে পারে বলে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে৷