অযোধ্যা, ১৯ জুন – গুলির শব্দে কেঁপে উঠল উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার রামমন্দির। মন্দির চত্বর থেকে উদ্ধার হয়েছে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের এক জওয়ানের মৃতদেহ। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে রামমন্দিরে। রামমন্দিরেরই নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ওই জওয়ান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আইজি, এসএসপি-সহ পুলিশের একাধিক শীর্ষ আধিকারিক। গুলিবিদ্ধ, রক্তাক্ত জওয়ানকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ বছর বয়সের ওই জওয়ানের নাম শত্রুঘ্ন বিশ্বকর্মা। তিনি উত্তরপ্রদেশের আম্বেদকর নগরের বাসিন্দা। ২৫ বছর বয়সী এই এসএসএফ জওয়ান রাম মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ওই জওয়ান আত্মহত্যা করেছেন, নাকি কেউ গুলি করে হত্যা করেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। মৃত জওয়ানের নিজের বন্দুক থেকেই ভুলবশত গুলি চলেছে কি না তাও এখনও স্পষ্ট নয়। আত্মহত্যার জল্পনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। নিরাপত্তারক্ষীদের অনুমান, রামমন্দিরে কর্তব্যরত ওই জওয়ান নিজের সার্ভিস রাইফেল পরিষ্কার করছিলেন। সেই সময় ভুলবশত এই গুলি চলতে পারে। যদিও এই নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বিবৃতি দেওয়া হয়নি।পুলিশ আধিকারিকদের পাশাপাশি রামমন্দির চত্বরে পৌঁছন ফরেনসিক আধিকারিকরা। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
জওয়ানের বেশ কয়েকজন সহকর্মীর দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই মানসিক দিক থেকে বিপর্যস্ত ছিলেন শত্রুঘ্ন। তাঁর কথাবার্তাতেও তা ধরা পড়ছিল। মৃত্যুর আগে তাঁকে হাতে মোবাইল নিয়ে কিছু একটা করতেও দেখা যায়। তারপরই শোনা যায় গুলির শব্দ। তদন্তের জন্য মৃত জওয়ানের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করেছেন আধিকারিকরা। জানা গেছে, রামমন্দিরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কয়েক বছর আগে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স বা এসএসএফ গঠন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেখানেই ২০১৯ সালে রামমন্দিরের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন শত্রুঘ্ন।
তবে এই ঘটনা প্রথমবার নয়। গত মার্চেও একইরকমভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন এক জওয়ান।তাঁকে সংকটজনক অবস্থায় ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। অনুমান করা হয়, তিনি নিজের সার্ভিস রাইফেল এ কে ৪৭ পরিষ্কার করার সময় আচমকাই গুলি বেরিয়ে তাঁর বুকে লাগে। রাম জন্মভূমি কমপ্লেক্সের মধ্যেই একটি ওয়াচ টাওয়ারে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কর্তব্যরত অবস্থাতেই এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ভক্তদের মধ্যেও।প্রতিদিনই রামলালার দর্শনে যান হাজার হাজার দর্শনার্থী। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরই মৃত্যুর ঘটনার পর আঁটসাঁট করা হয়েছে রাম মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।