লাগাতার আন্দোলনেও কোনো হেলদোল হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের। মানা হয়নি কৃষকদের কোনো দাবিই। তাই ফের একবার ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছেন কৃষকেরা। সাধারণতন্ত্র দিবসে দেশজুড়ে কিষাণ ট্রাক্টর প্যারেডের ডাক দিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। ওই দিন আন্দোলনের জেরে জনজীবন চূড়ান্ত বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু ট্রাক্টর মিছিল নয়, আগামী এক মাসে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন কৃষকেরা।
অল ইন্ডিয়া কিষান সভা বা এআইকেএস-এর প্রবীণ কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লিখিত আশ্বাস দেওয়ার পরও কোনও দাবি পূরণ করা হয়নি। তাই নতুন করে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। একাধিক কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হলো আগামী ২৬ তারিখ সারা দেশ জুড়ে কৃষকদের ট্রাক্টর প্যারেড।’
কৃষকদের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৩ জানুয়ারি গ্রামে গ্রামে নতুন কৃষি নীতির খসড়া পোড়াবেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এরপরই ৬ জানুয়ারি অর্থাৎ সাধারণতন্ত্র দিবসে দেশজুড়ে ট্রাক্টর মিছিলের কর্মসূচি পালিত হবে। সেদিন পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা ট্রাক্টর নিয়ে দিল্লিতে প্রবেশ করতে পারবেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকরা।
বারবার চেষ্টা করেও তাঁরা রাজধানীতে ঢুকতে পারেননি। এরপর ২৬ নভেম্বর কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করলে কৃষক নেতারা নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। ৩০ ডিসেম্বর ১২ ঘন্টা পাঞ্জাব বনধ সফল করার পর কেন্দ্রকে বার্তা দিয়ে কৃষক নেতা অভিমন্যু কোহার জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের দাবিগুলি অত্যন্ত স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও আমাদের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বার কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী করবে।’ সম্প্রতি কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন ছিলো, কেন্দ্রের একগুঁয়ে মনোভাবের কারণ কী? কেনই বা কৃষকদের ন্যায্য দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসছে না। এতকিছু সত্ত্বেও কোনও সদর্থক কোনও পদক্ষেপ নেয়নি মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে সরকারের ঘুম ভাঙাতে ফের ফের পথে নামছেন কৃষকরা।