কৃষি আইন নিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে দেশে যা চলছে, তার সমাধানের লক্ষ্যে কেন্দ্রের তরফে কোনও প্রচেষ্টাই সেভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধি। কৃষক ইউনিয়নগুলাের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নবমদফা বৈঠকও ব্যর্থ। কৃষক আন্দোলন জোরদার হচ্ছে, কিন্তু সমাধানের প্রকৃত দিশা নেই।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি বলেন, ‘বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে অচলাবস্থার কোনও শেষ নেই। কৃষি আইন নিয়ে সরকার পক্ষ ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। তাদের দৃঢ় ধারণা, যে কোনওভাবে আন্দোলনরত কৃষকদের দীর্ঘ আলােচনা প্রক্রিয়ার মধ্যে রেখে তাদেরকে হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারবেন, অর্থাৎ তারা বাধ্য হয়ে আন্দোলন বন্ধ করে দেবেন। উল্লেখ, শুধু ধারণা নয়, এটা কেন্দ্রের বিশ্বাস।
কৃষকদেরকে যদি কেউ বােকা মনে করেন তাহলে ভুল করবেন, ওরা বােকা নন। ভারতের কৃষকরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর থেকে বেশি জানেন। দেশের অচলাবস্থা সমাধানের একমাত্র উপায় কৃষি আইনগুলাে প্রত্যাহার করে নেওয়া। দেশের কৃষকদের দেশপ্রেমিক বলে উল্লেখ করে রাহুল গান্ধি দেশের আমজনতাকে কৃষকদের সমর্থন করার আর্জি জানান।
দলীয় সদর দফতরে নতুন তিনটি কৃষি আইন নিয়ে বুকলেট রিলিজ করার পর সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি বলেন, কেন্দ্র শেষ দুর্গ রক্ষার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে । তিনটি নতুন কৃষি আইন পাশ করানাে হয়েছে। ভারতীয় কৃষি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মান্ডি ভেঙে দেওয়া হবে। অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী আইন তুলে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি কৃষকরা যাতে নিজেদের আই দ্বারা সুরক্ষিত রতে না পারে তাও নিশ্চিত করা হয়েছে’। আন্দোলনরত কৃষকদের দাবিকে সঙ্গত মনে করে রাহুল গান্ধি তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মতে এটা ট্রাজেডি-সারা দেশের মানুষ হাস্যকর শাে দেখছেন। কেননা, দেশে যা ঘটছে, তার গভীরতা কত সেটা কেউ আন্দাজ করতে পারছে না ভারতবর্ষ ও দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে তিন-চারজন মানুষ কিনে রেখেছেন।
দেশের কৃষকরা তাদের প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন না। মান্ডি ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হবে। দেশের কয়েকজন মানুষ গম , চাল সহ আবশ্যকীয় খাদ্য শস্য বিশাল পরিমানে মজুত করতে পারবেন। তাদের নির্ধারিত দামে দেশের মধ্যবিত্ত জনগণকে আবশ্যকীয় সামগ্রী কিনতে হবে।
দেশের যুব সমাজকে আমি বলতে চাই যে তােমাদের থেকে স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে–এটা আগেও হয়েছে আমরা লড়াই করেছি। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা লে লড়াই করছেন ? তারা দেশপ্রেমিক, ৬০ শতাংশ মানুষের জীবিকা রক্ষার চেষ্টা করছেন। আমি তাদেরকে সমর্থন করছি।
দেশের মানুষের তাদেরকে সমর্থন করা উচিত, কেননা, তারা নিজেদের জন্য নয়, আমাদের জন্য লড়াই চালাচ্ছে। লাদাখে চিনা আগ্রাসন থেকে শুরু করে করােনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং কৃষক আন্দোলন নিয়ে কংগ্রেস নেতার মন্তব্যের কঠোর জবাব দিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন, “ রাহুল গান্ধি ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন।
আমি তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাই। আশা করব , সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি সবকটি প্রশ্নের উত্তর দেবেন। তাকে পাল্টা জবাব দিয়ে রাহুল গান্ধি বলেন, কে জে পি নাড়া? আমি কেন তার প্রশ্নের জবাব দেব। উনি কি আমার অধ্যাপক। আমি দেশের মানুষকে জবাব দেব’।
তিনি বলেন, কৃষকরা বাস্তব চিত্রটা জানেন। সকল কৃষকরা জানেন রাহুল গান্ধি কি করছেন। আমি কাউকে ভয় পাই না — প্রধানমন্ত্রী মােদি হােন বা অন্য কেউ। তারা কেউ আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না, কিন্তু শু্যট করতে পারেন। আমি দেশপ্রেমিক, আমি দেশকে রক্ষা করব। এটা আমার ধর্ম। আমি ওদের থেকেও বেশি ধর্মান্ধ।