রোগা-পাতলা চেহারা। কেউ দেখলে ভাবতেই পারবে না, এই চেহারার পেছনে লুকিয়ে আছে এক দুর্ধর্ষ আইএস জঙ্গি। আবার যে সে জঙ্গি নয়, রাজধানীতে বড় নাশকতার জন্য নিজেকে পুরোপুরি তৈরি করা এক জঙ্গি। কিন্তু নাশকতার আগেই দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের হাতে গ্রেফতার হয়েছে আইসিস জঙ্গি আবু ইউসুফ খান। উত্তরপ্রদেশে তার বাড়িতে হানা দিয়ে হতবাক দিল্লি পুলিশের অফিসাররা। সেই সঙ্গে বলরামপুর থেকে আবুকে সাহায্য করার অভিযোগে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
জানা গিয়েছে রীতিমতো বোমা তৈরির কারখানা বানিয়ে ফেলেছিল আবু। কী পাওয়া যায়নি তার বাড়ি থেকে! তার, বারুদ, ডিটোনেটর, সুইসাইড ভেস্ট, আইসিসের পতাকা– সব কিছু উদ্ধার হয়েছে তার বাড়ি থেকে। এই সবই প্রমাণ করছে বড় নাশকতার জন্য তৈরি হচ্ছিল আবু। দরকার পড়লে আত্মঘাতী হামলাও ঘটাতে সে। কিন্তু নিজের উদ্দেশ্য কাজে পরিণত করার আগেই দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আবুকে আটদিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান লোন উলফ কায়দায় হামলা ঘটানোর ছক কষেছিল সে। যাতে অন্য কারও সন্দেহ না হয় সে কারণে একাই হামলা চালানোর যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল। একাধিক ব্যক্তি ও স্থানকে নিজের নিশানা বানিয়েছিল আবু। তবে এই কাজে আরও অনেকের সাহায্য পেয়েছে সে। যাদের কাছে বেমা বানানোর সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বাইক– সবই পেয়েছে সে। আবুকে জেরা করে তাদের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।
শুক্রবার গভীর রাতে দিল্লির ধৌলা কুঁয়া এলাকায় পুলিশের স্পেশাল টিমের সঙ্গে এনকাউন্টার হয় আবুর। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় তাকে। তার কাছ থেকে দুটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। তারপরেই জানা যায় যে সে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তার বাড়িতে হানা দিয়ে এই সব সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর ছিল যে শুক্রবার ধৌলা কুয়া ও কারোল বাগের মাঝামাঝি এলাকায় আইএস-এর কিছু জঙ্গির তৎপরতা চলছে। তৈরি ছিল পুলিশ। তারা আগে থেকেই জাল বিছিয়ে রাখে। সেই জালে পা দেয় আবু। তারপরেই শুরু হয়ে গিয়েছিল এনকাউন্টার। সেনাবাহিনীর স্কুলের সামনে এই গুলির লড়াই চলে। মোট পাঁচ রাউন্ড গুলি চলার পরে গ্রেফতার করা হয় আবুকে।
সম্প্রতি আইসিসের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক চিকিৎসককেও। ২৮ বছরের আব্দুর রহমান এম এস রামাইয়া মেডিকেল কলেজে কর্মরত ছিল। তাকে গ্রেফতার করে এনআইএ। আইসিসের শাখা সংগঠন ইসলামিক স্টেট থোরাসান প্রভিন্সের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ রয়েছে ওই চিকিৎসকের। একটি মেডিকেল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করছিল রহমান, যার সাহায্যে আহত আইসিস জঙ্গিদের চিকিৎসা করা সহজ হত। তার সঙ্গে কিছু অস্ত্র তৈরির ব্যাপারেও যুক্ত ছিল সে।