এবার লোকসভা ভোটেও অর্থনৈতিক লেনদেনে নজরদারি চালাবে ইডি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা:  এতদিন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের প্রয়োগ করেছে ইডি। নিয়োগ থেকে রেশন, সব কিছুতেই ইডির বাহাদুরি দেখেছে রাজ্যের মানুষ। অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে চুলচেরা তদন্তে রাজ্যের শাসকদলের নেতা, মন্ত্রী ও আমলাদের দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এবার লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রেও এই এজেন্সির খবরদারি দেখবে রাজ্যবাসী। বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিতকরণ ও সেখানে নজরদারি চালাতে জেলাস্তরে ইন্টেলিজেন্স কমিটি গঠন করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো সেই কমিটিতে রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের একাধিক এজেন্সির প্রতিনিধিদের রাখা হবে। সেই প্রতিনিধি দলে ঠাঁই হচ্ছে ইডি-র। ইডি ছাড়াও থাকছেন ডিআরআই, জিএসটি, পুলিস, আবগারি, আয়কর দপ্তর সহ অন্যান্য এজেন্সির আধিকারিকরা।

যদিও এই নজরদারির বিষয়টি পুরোনো, কিন্তু তাতে ইডির সংযোজন এরাজ্যে আগে কখনও হয়নি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। এব্যাপারে গত জানুয়ারি মাসে কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যকে পাঠানো নির্বাচনী প্রেজেন্টেশনে ইডির প্রতিনিধি রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

কিন্তু ইডির এখানে কাজটা কী থাকবে? জানা গিয়েছে, বিগত নির্বাচনগুলিতে কোথাও কোথাও বেশি টাকা উদ্ধার অথবা ভোটারদের প্রভাবিত করার ঘটনা ঘটে। ইডির কাজ হবে, এই ধরণের ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করা। মূলত, বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রের অধীন বিধানসভা এলাকায় কোথায় কত টাকা, সোনা-দানা বা মদগাঁজা উদ্ধার হচ্ছে, সেসবের ওপর নজরদারি চালাবে। এই কাজে সব ক’টি এজেন্সি পরস্পর সমন্বয় রেখে কাজ করবে। ভোটারদের যাতে কোনওভাবেই প্রভাবিত করতে না পারে, সেই লক্ষ্যেই কমিশনের এই উদ্যোগ বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।


যাবতীয় রিপোর্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আসা এক্সপেন্ডিচার অবজার্ভারের হাতে তুলে দেবে এই ডিস্ট্রিক্ট ইন্টেলিজেন্স কমিটি। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কোন অঞ্চল বা কেন্দ্র অর্থনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর, তা চিহ্নিত করবে কমিশন। চিহ্নিত এলাকায় চলবে বাড়তি নজরদারি ও নাকা চেকিং। সেইসব এলাকায় ঘন ঘন তল্লাশিও চালানো হবে।

শুধু তাই নয়, এব্যাপারে আরও পদক্ষেপ নেবে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে আর্থিক লেনদেনের উপরেও নজরদারি চালানো হবে। এব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। কমিশনের একটি বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন যদি ২০ শতাংশ বেশি নগদের লেনদেন দেখা যায়, সেব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। অনিয়ম ধরা পড়লেই নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ।