জয়পুর, ২৩ এপ্রিল – ‘কংগ্রেস আমলে হনুমান চালিশা শোনাও অপরাধ ‘- বিরোধী দলকে নিশানা করে কড়া মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তীতে তিনি রাজস্থানের টঙ্ক-সোয়াই মাধোপুরে প্রচারে যান। সেখানে জনসভায় কংগ্রেস জমানাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, কংগ্রেস বাছাই করা কিছু মানুষের মধ্যে সম্পদ বিলিয়ে দিতে চায়। তিনি এও বলেন, কংগ্রেস যখন সরকারে ছিল, তখন হনুমান চালিশা শোনাও পাপ ছিল। মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে এক্সবার্তায় হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানান, হনুমানের বন্দনা ও গুণকীর্তন করেন। তারপরেই রাজস্থানের মাটিতে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসকে হনুমান চালিশা পড়া নিয়ে জোরাল আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী ।
রবিবার রাজস্থানের বাসোয়ারায় নরেন্দ্র মোদি কংগ্রেসের ইস্তেহারকে নিশানা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘দেশে যাদের সন্তানের সংখ্যা বেশি এবং যারা অনুপ্রবেশকারী, কংগ্রেস তাদের সম্পত্তি বিলিয়ে দেবে।’ মোদির এই মন্তব্যকে ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবারও মোদি দেশের সম্পদ বিলিয়ে দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। একইভাবে মঙ্গলবার প্রচার সভা থেকে একই ভাষায় কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ আমি দেশবাসীর কাছে একটা সত্য তুলে ধরেছি। আপনাদের সম্পত্তি কেড়ে নিতে চাইছে কংগ্রেস। তারা গভীর ষড়যন্ত্র করছে। কংগ্রেস এই সম্পদ আপনাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে বানিয়ে বাছাই করা মানুষের মধ্যে বন্টন করবে।’
মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে কংগ্রেসকে গদাযুদ্ধে আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী । রাজস্থানের টঙ্ক-সোয়াই মাধোপুরের নির্বাচনী জনসভায় বলেন, এদেশে যখনই কোনও দুর্বল সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখনই সিরিয়াল বম্ব ব্লাস্ট হয়েছে। আতঙ্কবাদীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কের তোষণমূলক রাজনীতির রহস্য ফাঁস করে দিয়েছি। আর এই জন্যই কংগ্রেস ও তাদের ইন্ডিয়া জোট খুব রেগে গেছে। তারা এতটাই ক্রুদ্ধ যে, তারা এখন সর্বত্র মোদিকে অপমান করছে।’ মোদির দাবি, সত্যি কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় কংগ্রেস ভয় পেয়েছে। তার রাজনৈতিক কৌশল গোপন করার চেষ্টা করছে।
লোকসভা ভোটের সময় রামনবমীর মতোই হনুমান জয়ন্তীতেও দেশের বিভিন্ন কোণায় এদিন পুজোপাঠ, শোভাযাত্রা করছে গেরুয়া শিবির। প্রায় প্রতিটি মন্দিরে মাইক বাজিছে হনুমান চালিশা, রামের ভজন। এমনকী বিজেপির নেতারাও এদিন প্রচারে জয় শ্রীরামের বদলে জয় বজরঙ্গবলী ধ্বনি দিয়ে ভাষণ শুরু করেছেন।ফলে হিন্দুত্ববাদীদের কাছে দিনটির মাহাত্ম্যকে অস্ত্র করেই রাজস্থানে ভোটপ্রচার করেন মোদি ।
শুধু রাজস্থানেই নয় কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের কথা তুলে ধরে মোদি বলেন, সেখানেও হনুমান চালিশা শুনলে মারধর করা হয়। মোদির আশ্বাস , এখন আপনারা নিশ্চিন্তে ভক্তিভরে হনুমান চালিশা পাঠ করতে পারেন। রামনবমী পালন করতে পারেন। এটাই বিজেপির গ্যারান্টি।
প্রচারসভার শেষপর্বে রাজস্থানেও ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আর্জি জানিয়ে বিজেপির তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলেন, ২৫টির মধ্যে ২৫টি আসনই আমাদের দিন। ভারতের প্রয়োজন একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার। পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপিই সেটা করতে পারবে।