ভোপাল, ২১ জানুয়ারি – সরকারি চিকিৎসক দম্পতির দেহ উদ্ধার করা হল মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার বীণা টাউন থেকে ৷ মাত্রাছাড়া ঋণের কারণেই এই আত্মহত্যা বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান৷ যে ঘর থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয় সেখান থেকে একটি চিঠি পাওয়া যায়৷ সেই চিঠিটি সুইসাউড নোট বলে মনে করা হচ্ছে৷
স্বামী বলবীর কঠোরিয়া এবং তাঁর স্ত্রী মঞ্জু কঠোরিয়া দুজনেই ছিলেন সরকারি চিকিৎসক৷ তাঁদের একমাত্র সন্তান প্রতীক ডাক্তারি পড়ুয়া৷ বিহারের পাটনার একটি কলেজে তিনি এমবিবিএস পড়ছেন৷ পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকালে পাটনা থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি৷ কিন্ত্ত সকালে বাড়ির সদর দরজা খোলা দেখে তাঁর মনে সন্দেহ জাগে৷ বাড়ির ভিতরে ঢুকে তিনি দেখেন বাবার দেহ সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে, মা বিছানায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর চিৎকার-চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর যায় পুলিশের কাছে।
ঘর থেকে উদ্ধার করা চিঠিতে লেখা , ব্যাঙ্ক থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নেন তাঁরা। ব্যাঙ্ককর্মীদের কাছে সেজন্য অপমানিত হতে হয়। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে তাঁরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। অন্য দিকে, তদন্তকারীদের কাছে চিকিৎসক দম্পতির পুত্র জানিয়েছেন, তিনি যে বাড়ি আসবেন, তা বাবা-মাকে বলেছিলেন। তখন স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়। বাবা-মা যে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বলবীর বিদিশা জেলার এক সরকারি হাসপাতালে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী মঞ্জু স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ । তিনি কাজ করতেন বীণা টাউনের একটি সরকারি হাসপাতালে। মঞ্জুর দেহ যে বিছানায় পড়েছিল, সেখান থেকে একটি খালি সিরিঞ্জ এবং তুলো পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অনুমান করা হচ্ছে, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষপ্রয়োগ করেন তিনি ।
তদন্তে আরও জানা যায়, তিন বছর আগে ওই চিকিৎসক দম্পতির একমাত্র কন্যা পূর্বাও আত্মহত্যা করেন। তিনি মানসিক অসুখে ভুগছিলেন। প্রতীক জানান, তাঁর বোন পূর্বা খুবই ভাল ছাত্রী ছিলেন। তিনিও ডাক্তারি পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের মৃত্যুতে চিকিৎসক দম্পতি খুবই ভেঙে পড়েন । তার ওপর প্রচুর ঋণ হয়ে যাওয়ায় দুই চিকিৎসক খুবই চাপের মধ্যে ছিলেন। একটি বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনাও করছিলেন ওই দম্পতি।
চিকিৎসক দম্পতির দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ৷ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।