জলে মেশান কয়েক টুকরো আদা, ব্যাস কেল্লাফতে 

বর্তমানে আমরা সকলেই স্বাস্থ্য নিয়ে কম-বেশি ভাবি। তা সকালে উঠে খালি পেটে জল খাওয়া হোক বা স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, চেষ্টা করি নিয়মিত পালন করার। ভালো থাকতে একটু সুঅভ্যাস তো গড়ে তুলতেই হয়, তাই নয় কি ? এই সুঅভ্যাসের নৌকায় চড়েই আপনি জীবনের নদী হেসেখেলে পার করে দিতে পারবেন। কোনো জটিল-কুটিল অসুখই সহজে আপনার নৌকাকে ডুবিয়ে দিতে পারবে না।

তাই বিশিষ্ট চিকিৎসকরাও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে জল পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এই সুঅভ্যাস থেকে আরও বেশি ফায়দা তুলতে চাইলে জলে মিশিয়ে নিতে পারেন কয়েক টুকরো আদা। তাহলে নীরোগ জীবন কাটানোর দিকে আরও এক কদম এগিয়ে যেতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আদা হলো পুষ্টিগুণের ভাণ্ডার। এই ভেষজে মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই নিয়মিত আদা খেলে শরীর যে সুস্থ থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। বিশেষত, জলের সঙ্গে আদা মিশিয়ে সকালে খালিপেটে খেলে একাধিক রোগ-ব্যাধি কাছে ঘেঁষার সুযোগ পাবে না।


তাই চটজলদি আদাপানির একাধিক চোখ ধাঁধানো উপকার সম্পর্কে জেনে নিন।

বমি বমি ভাব কাবু করতে পারবে না

বমি বা বমি বমি ভাবের মতো সমস্যা সমাধানে আদাপানির থেকে উপকারী আর কিছুই হতে পারে না। এই পানীয়তে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান মজুত রয়েছে যা চটজলদি এই ধরনের সমস্যা মিটিয়ে দেবে।

তাই যারা নানা কারণে প্রায়ই বমি বমি ভাব বা বমির সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা প্রতিদিন সকালে অবশ্যই আদাপানি পান করুন। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে। মিনিট খানেকের ভেতরেই দেখবেন আপনার সমস্যা উড়ে গেছে।

প্রদাহ দূর করার কাজে জুড়ি নেই

আমাদের শরীরের অন্দরে প্রতিনিয়ত বিপাকক্রিয়া চলছে। বিপাকের পরে দেহে তৈরি হয় কিছু ক্ষতিকর পদার্থ। এসব ক্ষতিকর পদার্থ কিন্তু শরীরে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। এমনকি এই কারণেই ক্রনিক রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।

তবে চিন্তা নেই, আপনার শরীরের প্রদাহজনিত সমস্যাকে চটজলদি প্রশমিত করতে সাহায্য করবে আদাজল। নিয়মিত এই পানীয় গলায় ঢালতে পারলেই প্রদাহের অভিঘাত কমবে। তাই প্রতিদিন সকালে আদাজল পান আবশ্যক।

কোলেস্টেরলের মহৌষধ

রক্তে উপস্থিত মোম জাতীয় পদার্থের নাম হলো কোলেস্টেরল। শরীরে এই উপাদানের আধিক্য হলেই তা রক্তনালীর ভেতরে জমে যায়। ফলে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ হয় না। এই কারণেই হার্টের অসুখ, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ, স্ট্রোকসহ একাধিক সমস্যা পিছু নেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

তাই যেভাবেই হোক কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। এই কাজে আপনার সহযোগী যোদ্ধা হতে পারে আদাপানি। নিয়মিত আদাপানি পান করলে দ্রুত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে বলে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

গ্যাস, অ্যাসিডিটি কমাতে ওস্তাদ

বেশিরভাগ বাঙালিরই গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো পেটের সমস্যা লেগেই থাকে। তাই বাঙালি বাড়িতে আর কিছু পান না পান, গণ্ডা খানেক গ্যাসের ট্যাবলেট পেয়েই যাবেন। তবে মুশকিল হলো, এই ধরনের ওষুধ নিয়মিত খেলে কিডনি, লিভারসহ দেহের একাধিক অঙ্গের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে।

তাই এই ধরনের ওষুধ না খেয়ে বরং প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস আদাজল খাওয়া শুরু করে দিন। হলফ করে বলতে পারি, কিছুদিনের মধ্যেই পেটের সমস্যাকে সমূলে উপড়ে ফেলতে পারবেন।

যেভাবে বানাবেন আদাজল

খুব সহজেই তৈরি করা যায় আদাপানি। এক্ষেত্রে একটি মাঝারি সাইজের আদা ভালো করে ধুয়ে নিয়ে এক গ্লাস জল গোটা রাত ফেলে রেখে দিন। তারপর সকালে উঠে জল ছেঁকে নিলেই হলো। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল আপনার মহৌষধ।

এরপর ঝটপট খালিপেটে আদাজল পান করুন। আশা করছি, এই পানীয়ই আপনাকে দীর্ঘজীবন পেতে সাহায্য করবে। তাই কাল থেকে আদাজল পান করা শুরু করে দিন। দূরে রাখুন রোগ-ব্যাধি।