অনশনরত পাঞ্জাবের কৃষকনেতার স্বাস্থ্য নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। গত ২৬ নভেম্বর অনশন শুরু করেছেন কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল। সোমবার ২৭ দিন পার করে ২৮ দিনে পা রেখেছে তাঁর এই আন্দোলন। তা সত্ত্বেও এখনও তিনি ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসকরা প্রতিনিয়ত নজর রাখলেও ক্রমশ ভেঙে পড়ছে তাঁর শরীর। যা নিয়ে চিকিৎসকরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলেন, এইভাবে চলতে থাকলে জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়ালের হৃদযন্ত্র সহ একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে পড়তে পারে।
ডাল্লেওয়ালের স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণে থাকা চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর রক্তচাপ অনিয়মিত। আশঙ্কাজনকভাবে বার বার ওঠা-নামা করছে। প্রোটিন ও ফ্লুইডের পরিমাণও কমে গিয়েছে। স্নায়ুতন্ত্রও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যকৃৎ সহ অন্যান্য অঙ্গের অবস্থা একেবারে ভালো নেই। ফলে যেকোনও সময় তাঁর হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সাধারণত এই ধরনের শারীরিক পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা রোগীকে আইসিইউ-তে ভর্তির নির্দেশ দেন। অথচ জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি কোনওমতে অনশনস্থল ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না। আন্দোলনরত কৃষকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের নেতার শরীরে কিটোন বডির মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে। কৃষক নেতা সুরজিৎ সিংহ ফুল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ডাল্লেওয়ালকে জোর করে অনশনস্থল থেকে তোলার চেষ্টা হলে রক্তারক্তি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন।
এদিকে আন্দোলনরত কৃষকদের দাবিদাওয়া এবং প্রস্তাব শোনার জন্য গত সপ্তাহেই আহ্বান জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত সেদিন ‘আমরণ অনশনরত’ কৃষকনেতার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবরও নেন। পাশাপাশি, আদালত পাঞ্জাব সরকারকে ডাল্লেওয়ালের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবার নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দাবি নিয়ে কৃষকদের আন্দোলন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসে রয়েছেন কৃষকরা। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানো তাঁদের দাবির অন্যতম। সেই আন্দোলন অব্যাহত। এরইমধ্যে গত ২৬ নভেম্বর থেকে কৃষকনেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল ‘আমরণ অনশন’ শুরু করতেই আন্দোলন নতুন মাত্রা লাভ করে।