ফের একজন বাঙালি বিশ্বজয় করলেন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় যুগ্মভাবে অর্থনীতিতে নােবেল পেলেন। তাঁর এই নােবেল প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বসিত গােটা রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দন জানানাে হয়েছে।
নােবেল কমিটির পক্ষ থেকে অর্থনীতিতে অভিজিতবার নােবেল প্রাপ্তির নাম ঘােষণা করার পরেই দেশেবিদেশের বহু মানষ তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে শুরু করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে অভিজিতের সঙ্গে যুগ্মভাবে অর্থনীতিতে নােবেল পাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী এস্থার ডাফলো এবং মাইকেল ক্রেসেন্ট।
পুরস্কার ঘােষণার পরে অভিজিতবাবুর প্রতিক্রিয়া, বিদেশের অনেক জায়গাতে কাজ করেছি। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও গবেষণার অনেক রসদ সংগ্রহ করেছি। কুড়িটির মতাে দেশে গিয়ে আমাকে গবেষণা করতে হয়েছে। বাবা আজ বেঁচে থাকলে ভালাে হত। তবে এত তাড়াতাড়ি নােবেল পাব, সেটা ভাবিনি। আমার আশ্চর্য লাগছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় সদ্য নােবেল জয়ীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, নােবেল জয়ের জন্য আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। অমর্ত্য সেনের পরে আরও একজন বাঙালি দেশকে সম্মানিত করলেন। আপনার নােবেল প্রাপ্তিতে আমরা উচ্ছ্বসিত।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নােবেলপ্রাপ্তিতে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, সাউথ পয়েট ও প্রেসিডেন্সির এই প্রাক্তনী ২০১৯ অর্থনীতিতে নােবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এঁর কাজের ক্ষেত্র ছিল অর্থনীতির উন্নয়ন। যা বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য। এবিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, বাঙালি হিসাবে আমি গর্বিত। অভিজিৎবাবু দেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছেন।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষও অভিজিতের নােবেল প্রাপ্তিতে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সুর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, তিনি নােটবন্দির বিরােধিতা করেছিলেন। দেশের নাগরিক নন বলে বিজেপি তাঁর সমালােচনায় মুখর হতে পারেনি। অমর্ত্য সেনের পর অভিজিৎবাবু গরিবদের নিয়ে কাজ করেছে।
অন্যদিকে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী ছড়া কেটেছেন। বলেছেন, জিৎ, জিৎ, জিৎ- অভিজিৎ নােবেল পেয়েছে। তার জন্য দেশবাসী গর্ব অনুভব করছেন।
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নােবেল প্রাপ্তিতে গর্বিত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অর্থনীতি নিয়ে অভিজিৎ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পড়াশােনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোঙারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল, অভিজিত বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন্টর গ্রুপের সদস্য ছিলেন। সেই সময় তিনি অর্থনীতি বিভাগে বেশ কিছু মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর সেই পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগকে সমৃদ্ধ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক অমল মুখােপাধ্যায়ও অর্থনীতিবিদ অভিজিতের নােবেল প্রাপ্তিতে গর্ব অনুভব করছেন। তিনি বলেছেন, অমর্ত্য সেনের পরে আবারও একজন বাঙালি নােবেল পুরস্কার পেলেন। অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দাশগুপ্ত মনে করেন, তিনি শুধু দেশের গৌরব নন, গােটা বাঙালী সমাজের গৌরব।
অভিজিতবাবুর একসময়ের বন্ধ শৈবাল ব্যানার্জির প্রতিক্রিয়া, তাঁর মতাে একজন যােগ্য অর্থনীতিবিদের এই পুরস্কার পাওয়া প্রয়ােজন ছিল। সেটাই ও পেয়েছে।