লাগাতার অনশনে শারীরিক অবস্থার অবনতি, হাসপাতালে ভর্তি অতিশী

দিল্লি, ২৫ জুন – জলের দাবিয়ে লাগাতার অনশন , অবশেষে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন দিল্লির জলমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির নেত্রী অতিশী মারলেনা। সোমবার মধ্যরাতে দিল্লির লোক নায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। অনশনের চার দিনের মাথায় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন অতিশী মারলেনা। তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে অনশন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

 

চরম জলসঙ্কটে ভুগছে রাজধানী দিল্লি। নির্জলা রাজধানীর জল নিয়ে হাহাকারের ছবি দেখা গেছে সর্বত্র। জলের চাহিদা মেটাতে প্রতিবেশী রাজ্যের থেকে বাড়তি জল চেয়েছিল দিল্লি সরকার। এই নিয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। অভিযোগ ওঠে , বিজেপি শাসিত হরিয়ানা চাহিদার তুলনায় কম জল দিচ্ছে দিল্লিকে । সমস্যা সমাধানের দাবিতে,  হরিয়ানার থেকে বাড়তি জল চেয়ে ২১ জুন, শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘জল সত্যাগ্রহ’ শুরু করেন জলমন্ত্রী অতিশী মারলেনা। 

সোমবার সন্ধ্যায় অতিশীর শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। অতিশীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরে ক্ষতিকারক কিটোনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন। কিন্তু তাতে রাজি হননি অতিশী। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হরিয়ানা সরকার জল না দেওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন। সোমবার গভীর রাতে তাঁর শরীরে শর্করার মাত্রা ৪৩-এ নেমে আসে।  মঙ্গলবার ভোরে তা আরও কমে হয় ৩৬।  মঙ্গলবার ভোরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে অতিশীর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পরই আপ সাংসদ সঞ্জয় অতিশীর অনশন তুলে নেওয়ার কথা জানান । তবে তিনি এ-ও জানান, অনশন তুললেও  জলের দাবিতে আপ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।


অতিশীর আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন জেলবন্দি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিহাড় জেল থেকে দেওয়া এক বার্তায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার বলেন, ‘‘তৃষ্ণার্তকে জল দেওয়া আমাদের সংস্কৃতি। এই নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’’ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ও এই বিষয়ে অতিশীর পাশে দাঁড়িয়েছে। সোমবারই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল এবং সাগরিকা ঘোষ অনশনরত অতিশীর সঙ্গে দেখা করেন। অতিশীর অভিযোগ, দিল্লি সাধারণত প্রতিদিন ১০০ কোটি ৫০ লক্ষ গ্যালন জল পায়। হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে জল আসে ৬১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে হরিয়ানা সরকার সেই পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ৫১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন জল ছাড়ছে। যার ফলে প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ জলসঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছেন।