• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

চিকিৎসকদের বকেয়া বেতন মেটাতে নির্দেশ দিল্লি হাইকোর্টের

চিকিৎসকদের বকেয়া বেতন অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট। দিল্লির একাধিক এমসিডি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা গত তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না।

প্রতীকী ছবি (Photo: AFP)

চিকিৎসকদের বকেয়া বেতন অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট । দিল্লির একাধিক এমসিডি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা গত তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই তাঁরা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। কেন ডাক্তাররা বেতন পাচ্ছেন না, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, দিল্লি সরকার ও উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষর কাছে জবাবদিহি তলব করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এদিন অন্তর্বর্তী আদেশে চিকিৎসকদের বেতন মিটিয়ে দিতে বলা হয়।

কস্তুরবা হাসপাতাল, হিন্দু রাও হাসপাতাল, মহর্ষি বাল্মীকি ইনফেকশাস ডিজিজেস হাসপাতাল, গিরিধারীলাল প্রসুতি হাসপাতাল ও রাজন বাবা ইনস্টিটিউট অফ পালমোনারি মেডিসিন অ্যান্ড টিউবারকিউলোসিস হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে উত্তর এমসিডি কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ, উত্তর এমসিডি পরিচালিত এই হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকেরা ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতনও দু’মাস ধরে বন্ধ। ফলে, ডাক্তারদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। রাজধানীতে কোভিড সংকটের মধ্যেই বৃহস্পতিবার গণহারে ইস্তফার হুমকি দিয়েছেন কস্তুরবা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকো।

অভিযোগ, গত মার্চ মাস থেকে তাঁরা হাতে বেতন পাননি। গত বুধবারই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ডাক্তারদের তরফে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁরা কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন। তার মধ্যে দাবি পূরণ না-হলে, গণহারে ইস্তফা দেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, কস্তুরবা হাসপাতালে প্রায় ১০০ রেসিডেন্ট ডাক্তার রয়েছেন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সংগঠনের মুখপাত্র ডা. অভিমান চৌহান বলেন, ‘বেতন ছাড়া আমাদের পক্ষে চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘তিন মাস হল, মার্চ থেকে আমরা বেতন পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি। কিন্তু, সুরাহা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেতন না মেটালে, ১৬ জুন আমরা গণহারে ইস্তফা দিতে বাধ্য হব।’

শিশু বিশেষজ্ঞ হিসেবে এই হাসপাতালে পাঁচ বছর ধরে তিনি রয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বলেন, ‘আমরা ফ্রন্টলাইন কর্মী হওয়া সত্ত্বেও এ ভাবে অবহেলিত কেন? রেসিডেন্ট ডাক্তারদের অনেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন। চিকিৎসক কোয়ার্টারে থাকার জায়গা তাঁরা পাননি। বাইরে বাড়িভাড়া করে থাকতে হয়। রোজ আসা যাওয়ার খরচ আছে। তা ছাড়া, সকলের সংসার রয়েছে। পরিবারের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। কী ভাবে চালানো সম্ভব?’

কস্তুরবা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার সংগীতা নাঙ্গিয়ার বক্তব্য, কর্তৃপক্ষের হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। যে কারণে চিকিৎসকদের বেতন বকেয়া পড়েছে। হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কপোরেশনের কেউ এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। শুধু রেসিডেন্ট ডাক্তার নন, স্থায়ী চিকিৎসকদের বেতনও মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। দিল্লির এই কস্তুরবা হাসপাতালে স্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থায়ী ডাক্তারের বক্তব্য, আমরা বেশিকিছু বলতে পারব না। তবে, এটা ঠিক, গত মার্চ মাস থেকে আমাদেরও বেতন বন্ধ। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকার কথা বলা হয়েছে। আশ্বস্ত করা হয়েছে, হাতে টাকা এলেই সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে, নির্দিষ্ট করে কোনও সময় দেওয়া হয়নি। ১৬ জুনের আগেই চিকিৎসকদের বেতন বাবদ বকেয়া পাওনা কর্তৃপক্ষ মিটিয়ে দেয় কি না, তা দেখার জন্য আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে।