ওয়ানড়ে ধ্বসস্তূপ ঘেটে খোঁজ করছে ডিপ সার্চ রাডার
মাইসুর, ৩ আগস্ট– মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৩৪০। বৃষ্টি ধসের মাঝেই এক নাগাড়ে চলছে প্রাণের খোঁজ। চারদিন কেটে গিয়েছে বিপর্যয়ের। সেই ওয়ানড়ে ভূমিধসে জীবিত কাউকেই আর উদ্ধার করা বাকি নেই। এখন কাজ কেবলই দেহ উদ্ধার। এমনই কথা শুক্রবার বলতে শোনা গিয়েছে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথা ভুল প্রমাণিত করে সেখান থেকে উদ্ধার হল ৪ টি প্রাণ। এরপরই নতুন আশা জাগল সত্য়িই কি সেখানে আর নেই কোনও প্রাণের স্পন্দন? এবার সেটাই খতিয়ে দেখতে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিপ সার্চ রাডার। দেখা হচ্ছে ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপের তলায় কোথায় কোনও জীবিত এখনও আটকে রয়েছেন কিনা।
সংবাদ সংস্থা এএনআই অনুসারে, সরকারি হিসাবে ৩০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি, অন্তত ৩৪০। নিখোঁজ এখনও শতাধিক মানুষ। চালিয়ার নদী থেকে এখনও পর্যন্ত ৯২টি দেহাংশ উদ্ধারের খবর মিলেছে।সেখানে কাদা-মাটির স্তূপের মধ্যে এখনও কি চাপা পড়ে রয়েছে প্রাণের স্পন্দন?
কেরল সরকার কেন্দ্রের কাছে রাডার পাঠানোর আর্জি জানিয়েছিল। এর পরই নর্দার্ন কমান্ডের তরফে একটি জেভিয়ার রাডার ও দিল্লির তিরঙ্গা মাউন্টেন রেসকিউ অর্গানাইজেশনের তরফে চারটি রিকো রাডার পাঠানো হয়। তাছাড়া শনিবার দিল্লি থেকে ওয়ানড়ে একটি বায়ুসেনার বিমানও পাঠানো হয়েছে ওয়ানড়ে।
শনিবার সকালে আকাশপথে ওয়েনাড়ের ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বায়ুসেনার কর্তারা। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল বিকাশ রানা জানিয়েছেন, আলাদা আলাদা উদ্ধারকারী দল গঠন করে একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, “শুক্রবারের মতো শনিবারও একই ভাবে উদ্ধারকাজ চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলকে ছোট ছোট এলাকায় ভাগ করা হয়েছে। পৃথক পৃথক উদ্ধারকারী দলকে ইতিমধ্যেই সেই জায়গাগুলিতে পাঠানো হয়েছে।” প্রতিটি উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে সেনার বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সারমেয়ও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সকাল থেকে ওয়েনাড়ের উদ্ধার অভিযানে সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। উদ্ধার অভিযানে পারদর্শী বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থার কর্মীরাও ওয়েনাড়ের ধস-বিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, সেনাবাহিনী, বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং পুলিশের নেতৃত্বে এই উদ্ধারকাজে সব মিলিয়ে ১৩০০ জনেরও বেশি উদ্ধারকারীকে মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা ওয়েনাড়ের পুঞ্চিরিমাত্তম এলাকায় একটি অস্থায়ী সাঁকো বানিয়েছেন গ্রামে উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য।
প্রসঙ্গত, এই ভূমিধসের ঘটনায় ওয়ানড়ের অন্তত ৩৫০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় বার বার বিঘ্নিত হয়েছে উদ্ধারকাজ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুরামালা ও মুন্ডাক্কাই গ্রামের মধ্যে বেইলি ব্রিজটি বানিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। যার পর থেকে ওই পথে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে যেতে পারছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী