প্রকৃতির কাছে ফের আত্মসমর্পণ দেবভূমির। রবিবার জোশিমঠে নন্দাদেবী হিমবাহ ফাটা জলের তােড়ে মারাত্মক ধস নামে উত্তরাখণ্ডে। প্রবলবেগে বরফগলা জলের সঙ্গে কাদা, পাথর, নুডির স্রোত পাহাড় বেয়ে নেমে এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সর্বস্ব। স্যাটেলাইট চিত্র বলছে হিমবাহ ফাটা জলের তােড়ে ধুয়েমুছে সাফ তপােবন। ক্ষতিগ্রস্ত জোশীমঠ সংলগ্ন অঞ্চল। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও।
তপােবন ও করণ প্রয়াগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উদ্ধার হয়েছে। ১৪৫ টি মৃতদেহ । এখনও নিখোঁজ কমপক্ষে ১৭০ জন। এডিআরএফ এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন আইটিবিপি-র জওয়ানরাও। উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছে বায়ুসেনা ও নৌবাহিনীর জওয়ানরাও গতকাল হিমবাহের স্রোতে চামােলির যােশীমঠের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও অবিশ্বাস্যভাবে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
বহুজনকে একেই বলে মিরাকল! এমন ম্যাজিকের আশাতেই বুক বেধে রয়েছে আরও কয়েকটি পরিবার। এদিন সকালে জেসিবি মেশিন এনে দ্বিতীয় টানেলের মুখ পরিষ্কার করে। বাকি মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে এনডিআরএফ। এই কাজে মােতায়েন ৩০০ আইটিবিপি জওয়ান।
সূত্রের খবর প্রায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ ওই টানেলে আটকে থাকার খবর মিলেছে। উত্তরাখণ্ডের ডিজিপি অশােক কুমার সাধারণ মানুষের কাছে প্যানিক না ছড়িয়ে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, হিমবাহের স্রোতের সঙ্গে নেমে আসা বিপুল সংখ্যক বােল্ডার ও নুড়ি মাথরের গায়ে। তপােবনের রোনি পাওয়ার প্রজেক্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে দুই প্রকল্পের কাজ চলছিল। আচমকা ঘটা এই বিপায়ে খোঁজ মিলছে না সেখানকার ১৫৩ জন শ্রমিকের।
দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টায় সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছেন উদ্ধারকারীরা । রাতেও প্রাণের সন্ধান পাওয়ার । আসায় কাজে লাগানাে হয় পুলিশ কুকুরকে। আকাশপথে উদ্ধার কাজে নেমেছে বায়ুসেনার এমআই-ব্জ্জ ও এএলএইচ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী। শনিবার রাতেই জারি করা হয়েছিল সতর্কবার্তা। ৪,৫,৬ ফেব্রুয়ারি তিনদিন ধরে ওই এলাকায় চলেছিল বৃষ্টিপাত। সঙ্গে তুষারপাত।
তারপরই গতকাল রাত ১০-৫৫ মিনিটে ভাঙে যােশীমঠে নন্দাদেবীর হিমবাহ। রবিবার সকালে সেই ধস আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। হিমবাহ ভেঙে পড়ার পর প্রবল তােড়ে জল নেমে আসতে শুরু করে। চামােলি জেলার তপােবন এলাকায় রানিগ্রামে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎপ্রকল্পের ওপর হিমবাহ। ভেঙে পড়ার ফলে জলে ভেসে গিয়েছে আশেপাশের বাড়ি সহ গােটা এলাকা।
মৃতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘােষণা করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিকেন্দ্র সিং রাওয়াত। আরও চ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘােষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। গুরুতর জখমলের আরও ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।