উত্তরাখণ্ড যা দেবভূমি বলে পরিচিত সেখানে এখন মৃত্যুর মিছিল। প্রবল বৃষ্টি এবং দুর্ঘটনার কারণে দেবভূমি পরিণত হয়েছে মৃত্যু উপত্যাকায়।পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং রাজ্য প্রশাসন অতি সক্রিয় হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে হার মানতে হয়েছে তাদেরকেও উদ্ধারকার্যে গতি আনার জন্য প্রশাসনিক সব পদক্ষেপই গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর তার জেরে ভূমি ধরে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড। গত দু’দিনের বৃষ্টি এবং তার কারণে একের পর এক দুর্ঘটনায় উত্তরে রাজ্যটিতে বিয়াল্লিশ জন মারা গিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর। আপাতত দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী এলাকায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পনেরোটি দল কাজে নেমেছে। বন্যাগ্রস্ত এলাকা থেকে গত চব্বিশ ঘন্টায় তিনশো মানুষকে উদ্ধার করেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি আপাতত উত্তরাখণ্ডের চারধাম যাত্রা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।গাড়োয়াল এবং কুমায়ুন-মূলত উত্তরাখণ্ডকে দুটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়।
বুধবার ওই রাজ্যের ডিআইজি জানিয়েছেন, বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন অঞ্চল। ধস নেমে কুমায়ুনের পর্যটন ক্ষেত্র নৈনিতালের সঙ্গে যোগাযোগের সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি সংক্রান্ত দুর্ঘটনাও সবচেয়ে বেশি ঘটেছে নৈনিতালেই।
মৃতদের মধ্যে আঠাশজনই নৈনিতালের বাসিন্দা। এ ছাড়া আলমোড়া এবং চম্পাওয়াতে ছয়জন করে মোট বারোজন, পিথোরাগড় এবং উধম সিংহ নগরে একজন করে মোট দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগে মৃতদের পরিবারকে বুধবার এককালীন চার লক্ষ টাকা করে অর্থ সাহায্যের ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
মঙ্গলবার রাতে ধস নেমে নৈনিতালের সঙ্গে রাজ্যের বাকি এলাকাগুলির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। বুধবার অবশ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ধস নেমে বন্ধ হয়ে যাওয়া নৈনিতাল-কালাধুঙ্গির রাস্তাটি খুলেছে। ধীরে ধীরে গাড়ি চলাচলও শুরু হয়েছে।
ছুটি কাটাতে এসে নৈনিতালে আটকে পড়েছিলেন বহু পর্যটক। রাস্তা খুললেও নৈনিতালের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির জন্য রাস্তা খারাপ হয়ে যাওয়ায় যান চলাচল এখনও ব্যাহত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে রাস্তা খুললেও পর্যটকদের ফিরতে আরও সময় লাগবে।