আনাজ মাণ্ডির ঘিঞ্জি এলাকায় বহুতল কারখানাটিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। রবিবার ভােরে হঠাই আগুন লেগে যায়। ঘুমন্ত অবস্থায় তারা বুঝতে পারেননি আগুন লেগে গিয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল ৪৩ জনের। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রায় ৫২ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগুনে জখম ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে লােকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে। সেখানে অনেকেরই অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার ভাের পাঁচটা নাগাদ আগুন লাগে দিল্লির আনাজ মাণ্ডির রাণী ঝাঁসি রােডের এক বহুতলে। এই বহুতলটির মধ্যে চামড়ার কারখানা, প্যাকিং বাক্সের কারখানা ও প্লাস্টিকের কারখানা ছিল বলে জানা গিয়েছে। ভােরবেলায় আগুন লাগায় শ্রমিকরা কেউ সেভাবে টের পাননি। বহুতলে আটকে পড়েন বহু শ্রমিক। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ২৭ টি ইঞ্জিন। প্রায় দেড়শাে দমকলকর্মী উদ্ধার করেন ৬৩ জনকে। ভিতরে আরও কয়েকজন আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এখনও চলছে উদ্ধার কাজ। বহুতলটি ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় উদ্ধারকাজে অসুবিধের মধ্যে পড়তে হয়েছে দমকল বাহিনীকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সহ সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও শীর্ষ স্তরের আধিকারিকরা। কী কারণে আগুল লেগেছে, তার তদন্তে নেমেছে দমকল বাহিনী। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের অনুমান শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
ঘিঞ্জি গলিতে বাড়ির মধ্যেই তিনটি কারখানার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে কিনা, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দমকল ও পুলিশ বাহিনী। এই ঘটনায় ওই বহুতলটির মালিকের ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার ভােরের এই ঘটনায় সমবেদনা জানিয়ে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। তিনি বলেন অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। ট্যইটে নিহতদের পরিবারের প্রতি শােকজ্ঞাপন করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এদিনের আগুন লাগার ঘটনার পর দমকলের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। বস্তুত তাদের তৎপরতায়ই বাঁচানাে সম্ভব হয়েছে আরও বহু প্রাণ। দিল্লির দমকলকর্মী রাজেশ শুক্লা মানবিকতা ও কর্তব্যবােধকে সর্বাগ্রে রেখে রবিবার বাঁচিয়েছেন ১১ টি প্রাণ। উদ্ধারকাজে নিজেও দগ্ধ হয়েছেন। পায়ে আঘাত লেগে তিনি বর্তমানে দিল্লি এলএনজেপি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘দমকলকর্মী রাজেশ শুক্লা প্রকৃত হিরাে। আগুনের স্থলে প্রথম দমকলকর্মী হিসাবে তিনি প্রবেশ করেন। তিনি ১১ টা প্রাণ বাঁচিয়েছেন। হাড়ে আঘাত লাগা সত্ত্বেও তিনি কাজ চালিয়ে গেছেন। সাহসী এই নায়ককে কুর্নিশ’।