ডেটলাইন অযোধ্যা, অযোধ্যাতেও কি নড়বড়ে বিজেপি? রামের নাম করে কি অখিলেশ ছিনিয়ে নেবেন গেরুয়া দুর্গ?

‘রাম কি কসম খাতে হ্যায় অখিলেশ কো লাতে হ্যায়’ 

ভোটপর্বের একেবারে শেষে যে এইভাবে মর্যাদাপূর্ণ পুরুষোত্তম রামকেও বিরোধীপক্ষ হাইজ্যাক করে নেবে, তা বোধহয় গেরুয়া শিবির আন্দাজ করতে পারেনি।

কিন্তু অযোধ্যায় অখিলেশ যাদবের শেষ রোড শো-তে যে স্লোগান উঠেছে, তাতে যথেষ্ট আশঙ্কায় বিজেপি।


এমনিতেই অযোধ্যার বিজেপি বিধায়ক বেদপ্রকাশ গুপ্তকে নিয়ে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভের অন্ত নেই, তার উপরে যদি একমাত্র যাঁর নামে ভোট চাওয়া পদ্ম শিবিরের শেষ ভরসা ছিল, সেই শ্রীরামকেও বিরোধী শিবির নিজেদের দিকে টেনে নেয়, তাহলে কি হবে?

যে শহর গত তিরিশ বছরে ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ইতিহাসকে বদলে দিল, যে অযোধ্যা গত তিন দশকে গেরুয়া দুর্গে পরিণত হয়েছিল, সেই জনপদেও কি অন্য পতাকা উড়বে?

রামমন্দিরের আন্দোলন গত তিরিশ বছরে বিজেপিকে লোকসভায় ২ থেকে ৩০০ তে পৌঁছে দিয়েছে , আর সেই আন্দোলনের অন্যতম নেতা হনুমানগড়হি মন্দিরের মোহান্ত রাজু দাস ছিলেন এই অযোধ্যা বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার অন্যতম দাবিদার।

কিন্তু শেষপর্যন্ত যোগীর কাছের লোক হওয়ার কারণে নাকি মোহান্ত রাজু দাসের নাম কাটা যায়, দিল্লির হাইকম্যান্ডের নির্দেশে আবার ভোটের ময়দানে গতবারের বিধায়ক বেদপ্রকাশ গুপ্তই।

এমনিতেই পুরনো বিধায়ককে নিয়ে অযোধ্যায় ধিকিধিকি আগুন জ্বলছিল, তারপরেও সেই তাঁকেই ফের পদ্ম শিবির প্রার্থী করায় বিরোধী শিবির একেবারে জোরকদমে রাস্তায় নেমে পড়েছে।

সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী পন পান্ডে তো বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসছেন, রামের নামে ভোট দিতে হলে আমাকে ভোট দিন, আমার চেয়ে বড় রামভক্ত আর কে আছে।

তাহলে ভাযোধ্যায় কি হবে? হিন্দুত্বের দুর্গে কি এবার হেরে যাবে বিজেপি। আশায় বুক বাঁধছে বিরোধীরা।

এমনিতেই যোগী আদিত্যনাথের স্লোগান অনুযায়ী হিন্দুদের সমস্ত ভোট পদ্মপ্রতীকে পড়ছে না, যাদব আর মুসলিম ভোট সমাজবাদী পার্টির দিকে ঢলে গেছে, এরপর যদি ব্রাহ্মণরাও মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে ঘোর বিপদ গেরুয়া শিবিরের।

আর অযোধ্যা শহরে অখিলেশের রোড শো তে মানুষের ঢল দেখে তো মোদি-অমিত শাহদের কপালে দুশ্চিন্তার মেঘ জমবেই।

কারণ অযোধ্যায় হার মানে তো শুধু একটা বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজয় নয়, হিন্দুত্বের আইকনিক শহর হাতছাড়া হয়ে যাওয়া।

এই আশঙ্কার কালো মেঘ তো বিজেপি র জন্য চ্যালেঞ্জ নয়, আসলে আরএসএস নামক সংগঠনকে নড়বড়ে করে দেয়।

এবং হিন্দুত্বের যে ন্যারেটিভকে আশ্রয় করে এতদিন বিজেপি পথ চলছিল, সেই ন্যারেটিভের ভবিষ্যৎ নিয়েই সংশয় তৈরি হয়ে যাবে।