বুধবার দুপুরেই ল্যান্ডফল হয়েছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় নিসর্গের। নিসর্গের জেরে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী এলাকায়। সেইসঙ্গে সতর্ক করা হয় গুজরাত উপকুলকেও। লাল সতর্কতা জারি হয় মুম্বইয়ে। কারণ আইএমডি জানিয়েছে, মুম্বই থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে আলিবাগে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা ছিল নিসর্গের। সকাল থেকেই র্যাডারে ঘূর্ণিঝড়ের চোখ ধরা পড়েছে বলে জানায় আইএমডি। নজর রাখা হচ্ছিল প্রতি মুহূর্তের পরিস্থিতিতে। নিসর্গ’এর কোপে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও সাতজন।
আইএমডি জানিয়েছে, দুপুরেই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে নিসর্গ । এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে সকালেই ১০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলির প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্র সবরকমভাবে পাশে রয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে মুম্বইয়ের বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকার আবেদন করেন। এখনও পর্যন্ত মুম্বইয়ের দেখা সবথেকে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছড়ে পড়তে চলেছে নিসর্গ। লকডাউনের পঞ্চম পর্যায়ে যেসব অর্থনৈতিক কাজ শুরু হয়েছিল, তার অনেক কিছুই মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডফলের সময় নিসর্গের গতিবেগ ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটারের মধ্যে ছিল। এর ফলে প্রায় সাড়ে ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস দেখা যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের উপকূলবর্তী এলাকায় ৩০ টির বেশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি রাখা হয়েছে। আরও দলকে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিআরএফ প্রধান এস এন ঠাকুর।
বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। নিম্ন উপকূলবর্তী এলাকা ও বস্তি এলাকা থেকে মানুষদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলিকে বলা হয়েছে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে। বিদ্যুৎ পর্ষদকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে। পালঘরের পারমানবিক শক্তি কেন্দ্রকে সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঠাকরের দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সচিবালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে ঘণ্টা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। সেনা, বায়ুসেনা, নৌবাহিনীকে আইএমডির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। আইএমডির পূর্বাভাস অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়েছে তাদের।