দেশের নারী সুরক্ষা আইন প্রসঙ্গে ফের মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রমুখ। তাঁদের সামনেই দেশে মহিলা ও শিশুদের উপর হওয়া অপরাধের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির আর্জি, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের দ্রুত বিচার প্রয়োজন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে, মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তাহীনতা সমাজের একটি গুরুতর সমস্যা।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী–চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে। আন্দোলন চলছে বিদেশের মাটিতেও। এই ঘটনায় ধর্ষণ–বিরোধী কঠোর আইন চেয়ে দু’বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে শিশু নিগ্রহের ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। এই ঘটনাগুলি নিয়ে প্রকাশ্যে কোন মন্তব্য না করলেও পরোক্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি এদিন বলেন, ‘মহি্লাদের নিরাপত্তার জন্য দেশে অনেক কঠোর আইন আছে। ২০১৯ সালেই পাশ হয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালত আইন। জেলার নজরদারি কমিটিও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের সেগুলিকে আরও বেশি করে কাজে লাগাতে হবে। মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের মামলাগুলিতে যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তত বেশি করে দেশের জনগণ নিরাপদ বোধ করবে।’
মোদি আরও বলেন, ”বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা রোধ করতে গত এক দশকে নানা স্তরে কাজ হয়েছে। গত ১০ বছরে দেশের ন্যায়বিচার দেওয়ার পরিকাঠামোকে মজবুত করে তুলতে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গত ২৫ বছরে এই খাতে যত ব্যয় হয়েছে তার ৭৫ শতাংশই হয়েছে এই এক দশকে।”
প্রসঙ্গত, গত ২২ আগস্ট ধর্ষণ রুখতে কঠোর আইন আনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারও তিনি একই দাবিতে আবার চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রীকে। মমতার দাবি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটছে, সেগুলি রুখতে অবিলম্বে কঠোরতম আইন আনতে হবে। তাঁর প্রস্তাব, দেশের প্রতিটি জায়গায় ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্ট তৈরি করা হোক। তার মাধ্যমে ১৫ দিনের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দোষীদের শাস্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত হোক। এবার সেই একই সুর শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর মুখেও।
দেশের বিচার ব্যবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের অবদান নিয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ সুপ্রিম কোর্টের ৭৫ বছর পূর্তি হচ্ছে। এই যাত্রাপথ শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের যাত্রা নয়, এটি ভারতের সংবিধান এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধের যাত্রা। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আরও পরিণত হয়ে উঠছে, এটি তারই যাত্রা। ‘