দেশ আর কোনও ধর্ষণের ঘটনার অপেক্ষা করবে না :  ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়

আর জি কর হাসপাতালে নৃশংস খুন ও ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় মঙ্গলবার স্পষ্ট বলেন, ‘দেশ আর একটাও ধর্ষণের ঘটনার অপেক্ষা করবে না’। স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘এই যৌন নির্যাতনের ঘটনা মানুষের চেতনাকে আঘাত করেছে। নিহত নির্যাতিতার নাম এবং ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে।’ দেশ কি ফের কোনও ধর্ষণের জন্য অপেক্ষা করবে ? প্রশ্ন তোলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশপ্রশাসনকেও কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করে দেশের শীর্ষ আদালত।
 

আর জি করের নৃশংস ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে।এই ঘটনায় দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের প্রশ্ন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা যুক্ত হচ্ছেন। আমরা আর কোনও ধর্ষণের জন্য অপেক্ষা করতে পারব না! পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন।’ বর্তমানে যে বন্দোবস্ত রয়েছে তা কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত নয় বলেও পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির।

দেশের চিকিৎসক মহলের ওপর হামলার ঘটনায় চিন্তিত শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কথায়, ”চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যারা যুক্ত তাঁরা সহজেই হামলার শিকার হচ্ছেন। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিতসকেরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে একটি সুপারিশ কমিটি গঠন করেছে সর্বোচ্চ আদালত। এই টাস্কফোর্স ডাক্তারদের নিরাপত্তা, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এবং অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত নিয়মবিধি রূপায়ণে একটি সুপারিশ জমা দেবে।

সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে এদিন এই শুনানি হয়। সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, প্রতিটি হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। মহিলা এবং পুরুষ চিকিৎসকদের পৃথক বিশ্রামাগারমহিলা চিকিৎসকদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া নার্সদের আলাদা আলাদা রুম দিতে হবে। এদিকে আর জি কর কাণ্ডে সিবিআইয়ের রিপোর্টও তলবও করেছে শীর্ষ আদালত। 
 
কলকাতার আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে উদ্ধার হয় তরুণী শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু হয়। কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে গোটা দেশ। নিহত নির্যাতিতার ন্যায়বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। অপরাধীর শাস্তির দাবিতে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
 

এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার শুনানিতে এ দিন দেশের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘এই যৌন হেনস্থার নৃশংসতা মানুষের চেতনাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।’ প্রধান বিচারপতি জানতে চান, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করা হয়েছে কি না। জবাবে রাজ্য জানায়, তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান রাজ্যের আইনজীবী। আগামী ২২ আগস্ট সিবিআই-কে তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত। হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনায় কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়েও ওই দিন রিপোর্ট দেবে রাজ্য। আগামী ২৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি