আজ করােনা’র বর্ষপূর্তি

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই ১৭ নভেম্বরেই চিনের হুবেই প্রদেশের উহানে থাবা বসিয়েছিল করােনা । এই দিনে আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল এক। তারপর এক বছর কেটে গিয়েছে। এখন গােটা বিশ্বে সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫ কোটিতে। দেড় কোটি ছুইছুই মৃত্যুর সংখ্যা। 

বেশ কয়েকটি রিপাের্টের তথ্য বলছে, ওই দিন ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির দেহে প্রথম এই ভাইরাসের সন্ধান মেলে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই সংখ্যাটা ২৭ পৌঁছ। ২০ ডিসেম্বরে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৬০। ২০২০-র ১ জানুয়ারিতে চিনে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছয় ৩৮১-তে। উহানকে করােনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করার পরই ২৩ জানুয়ারি সেখানে লকডাউন জারি করা হয়। 

তত দিনে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও থাবা বসাতে শুরু করে দিয়েছে করােনা । ১০ ফেব্রুয়ারিতে গােটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যাটা পৌঁছয় ৪২ হাজার ৮০০। ১ মার্চের মধ্যে এক লক্ষ ছড়িয়ে গিয়েছিল সংক্রমণ। দৈনিক আক্রান্তও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল মৃত্যুর সংখ্যাও। ২৬ মার্চ ৫ লক্ষ ছাড়িয়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা। ততদিন দৈনিক আক্রান্ত ৬০ হাজার ছড়িয়ে যায়। প্রতি দিন মৃত্যু হচ্ছিল প্রায় ৩ হাজার মানুষের। 


একে একে ইউরােপ, এশিয়া এবং আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি করােনার হটস্পট হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করােনাকে অতিমারি হিসেবে ঘােষণা করে। তার পর যত সময় গড়িয়েছে সংক্রমণ তত তীব্র আকার ধারণ করেছে। ২০২০-র মাঝামাঝি সময়ে দেখা যায়, যে চিন থেকে করােনা’র সূত্রপাত তারাই এই অতিমারিকে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। তত দিনে ইউরােপ এবং আমেরিকায় করােনার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভারত-সহ এশিয়ার অন্য দেশগুলােতেও সংক্রমণ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। 

একটা সময় আমেরিকা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বে শীর্ষ স্থানে পৌঁছে যায়। আজ পর্যন্ত শীর্ষস্থানেই রয়েছে আমেরিকা। সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভারত। এর পর রয়েছে ব্রাজিল, ফ্রান্স এবং রাশিয়া। সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় যে বিষয়টি হল, এই এক বছরের মধ্যে চিন সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষ স্থান থেকে ৬০ নম্বর স্থানে নেমে এসেছে। মৃত্যুর নিরিখে ৩৬ তম স্থানে রয়েছে তারা। 

আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি তাে বটেই, ভারতও শুরুর দিকে ছিল অনেকটাই নীচের সারিতে। ভারতে গত ১ মার্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩। আট মাসের মধ্যে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৮৮ লক্ষ। মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫১৯। করােনার উৎস কী এখনও তা নিয়ে নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। প্রথম দিকে যেমন জল্পনা চলছিল চিনে উহানের ল্যাব থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। বায়ােকেমিক্যাল অস্ত্র তৈরি করতে গিয়েই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। এই তথ্যকে চিন যেমন মান্যতা দেয়নি। তেমন হু-ও এই অভিযােগগুলােকে নস্যাৎ করেছে।