• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বদলাপুরের অভিযুক্তর মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মৃতের মায়ের 

পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে বদলাপুরের যৌন হেনস্থাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অক্ষয় শিন্ডের। সোমবার ঠানে পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনা নিশ্চিত করা হয়। পুলিশের দাবি, পুলিশের ভ্যানে তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের বন্দুক হাতিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বদলাপুরের ঘটনার মূল অভিযুক্ত।  সেই সময়  মূল অভিযুক্ত অক্ষয় শিন্ডের উদ্দেশ্যে  গুলি চালানো হয় এবং সেই গুলিতেই মৃত্যু হয় তাঁর। যদিও পুলিশের এই দাবি মানতে রাজি নন মৃতের পরিবার। মৃতের মায়ের অভিযোগ, এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কের শীর্ষে  উঠে এসেছেন মহারাষ্ট্র পুলিশের সিনিয়র ইনস্পেক্টর সঞ্জয় শিন্ডে। তাঁর ছোড়া গুলিতেই মৃত্যু হয় বদলাপুর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের।

পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে বদলাপুরের যৌন হেনস্থাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অক্ষয় শিন্ডের। সোমবার ঠানে পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনা নিশ্চিত করা হয়। পুলিশের দাবি, পুলিশের ভ্যানে তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের বন্দুক হাতিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বদলাপুরের ঘটনার মূল অভিযুক্ত।  সেই সময়  মূল অভিযুক্ত অক্ষয় শিন্ডের উদ্দেশ্যে  গুলি চালানো হয় এবং সেই গুলিতেই মৃত্যু হয় তাঁর। যদিও পুলিশের এই দাবি মানতে রাজি নন মৃতের পরিবার। মৃতের মায়ের অভিযোগ, এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কের শীর্ষে  উঠে এসেছেন মহারাষ্ট্র পুলিশের সিনিয়র ইনস্পেক্টর সঞ্জয় শিন্ডে। তাঁর ছোড়া গুলিতেই মৃত্যু হয় বদলাপুর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের।

 বদলাপুরের যৌন নিগ্রহের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত মহারাষ্ট্র। বদলাপুরের দুই নাবালিকা স্কুলছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় সোমবার এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে মূল অভিযুক্ত অক্ষয় শিন্ডের। অক্ষয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুলিশের বন্দুক কেড়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল সে।  সেই সময় পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। তবে পুলিশের এই দাবিকে এতটা সহজ ভাবে দেখছেন না অক্ষয় শিন্ডের মা। অক্ষয়ের মায়ের দাবি, তাঁর ছেলে বড়সড় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। সেই ষড়যন্ত্রের কারণেই অক্ষয়কে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর ।  
 
মহারাষ্ট্র পুলিশ মহলে সঞ্জয় শিন্ডে পরিচিত নাম। পুলিশের ‘এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট’ দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। প্রদীপ শর্মার নেতৃত্বে এই দল এক সময় মহারাষ্ট্রের অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমনকি প্রদীপ শর্মার কর্মজীবনের উপর ভিত্তি করে সিনেমা এবং তথ্যচিত্রও হয়েছে। লেখা হয়েছে বইও। ২০০৬ সালে গ্যাংস্টার ছোট রাজনের ঘনিষ্ঠ রামনারায়ণ গুপ্তকে এনকাউন্টার করেছিলেন প্রদীপ। প্রদীপ শর্মার এই দলই ২০১৭ সালে তোলাবাজি মামলায় ঠাণে থেকে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই ইকবাল কাসকরকে গ্রেফতার করেছিল ।তবে প্রদীপ শর্মার বিরুদ্ধে ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগ ওঠায় তিনি এখন যাবজ্জীবন কারাবন্দির জীবন যাপন করছেন । সঞ্জয় তাঁর অধীনেই কাজ করেছেন কয়েক বছর।

সঞ্জয় শিন্ডে এক সময় মহারাষ্ট্র পুলিশের সদস্য ছিলেন। বদলাপুর-কাণ্ডের পর সরকার সিট্ গঠন করলে তার সদস্য করা হয় সঞ্জয়কে। তবে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধেও একাধিক  অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, ২০১২ সালে তিনি নাকি এক খুনের মামলার অভিযুক্তকে জেল থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। এই ঘটনায় তাঁকে তদন্তের সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়াও মুম্বইয়ে তাঁরই এক সহকর্মীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ। ২০০০ সালে একটি অপহরণ মামলাতেও নাম জড়িয়ে পড়ে  সঞ্জয়ের।

সোমবার বদলাপুরের অভিযুক্তকে এনকাউন্টারের ঘটনাতেও নাম জড়াল সঞ্জয় শিন্ডের।  পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় তালোজা জেল থেকে অক্ষয়কে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য গিয়েছিল পুলিশ। তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর দায়ের করা এক পৃথক মামলায় তাঁকে জেরা করার অনুমতি পেয়েছিল তারা। অভিযোগ,  জেল থেকে ফেরার পথে মুম্বরা বাইপাসের কাছে আচমকাই এক কনস্টেবলের পিস্তল কেড়ে নিয়েছিলেন অক্ষয়। তার পরই ওই কনস্টেবলকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় অক্ষয়ের। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান অক্ষয়ের মা।

অক্ষয়ের মায়ের  অভিযোগ, ‘আমার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। পুলিশই আমার ছেলেকে খুন করেছে।’’ ছেলের মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন তাঁর মা। তাঁর দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এই খুনের তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ দেহ নেবেন না। অক্ষয়ের মায়ের দাবি, জেলের মধ্যে পুলিশ তাঁর ছেলেকে অত্যাচার করত। মারধরও করা হত। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অক্ষয়ের মা বলেন , তাঁর ছেলে বাজি ফাটলে রাস্তায় যেতে ভয় পেত, সে কী করে পুলিশের বন্দুক কেড়ে নিয়ে গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটাল ? 

আগস্টের ১২ তারিখে স্কুলের শৌচাগারে চার বছরের দুই নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে উত্তাল হয় বদলাপুর। বদলাপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সাফাইকর্মী ছিল অক্ষয় শিন্ডে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্কুলের চার বছরের দুই ছাত্রীর উপর লাগাতার যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল সে। তদন্তে জানা গেছে, অন্তত ১০-১২ দিন ধরে ওই দুই শিশুর উপরে যৌন নিগ্রহ চালিয়েছিল অক্ষয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্রের বদলাপুর। অভিযোগ,  পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয় জনতা। দিনের পর দিন রেল অবরোধ, বনধও ঘোষণা করা হয়। চাপের মুখে পড়ে ঠাণের পুলিশ কমিশনার, সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর ও অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করেন উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগও ওঠে ওই নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে। এরপরেই নড়েচড়ে বসে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। পুলিশ ছাড়াও এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’ গঠন করেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ । গত ১৭ আগস্ট গ্রেফতার হয় অক্ষয়। ২৩ সেপ্টেম্বর এনকাউন্টারে মৃত্যু হল শিন্ডের ।