সঞ্জয় শিন্ডে এক সময় মহারাষ্ট্র পুলিশের সদস্য ছিলেন। বদলাপুর-কাণ্ডের পর সরকার সিট্ গঠন করলে তার সদস্য করা হয় সঞ্জয়কে। তবে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, ২০১২ সালে তিনি নাকি এক খুনের মামলার অভিযুক্তকে জেল থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। এই ঘটনায় তাঁকে তদন্তের সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়াও মুম্বইয়ে তাঁরই এক সহকর্মীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ। ২০০০ সালে একটি অপহরণ মামলাতেও নাম জড়িয়ে পড়ে সঞ্জয়ের।
সোমবার বদলাপুরের অভিযুক্তকে এনকাউন্টারের ঘটনাতেও নাম জড়াল সঞ্জয় শিন্ডের। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় তালোজা জেল থেকে অক্ষয়কে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য গিয়েছিল পুলিশ। তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর দায়ের করা এক পৃথক মামলায় তাঁকে জেরা করার অনুমতি পেয়েছিল তারা। অভিযোগ, জেল থেকে ফেরার পথে মুম্বরা বাইপাসের কাছে আচমকাই এক কনস্টেবলের পিস্তল কেড়ে নিয়েছিলেন অক্ষয়। তার পরই ওই কনস্টেবলকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় অক্ষয়ের। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান অক্ষয়ের মা।
অক্ষয়ের মায়ের অভিযোগ, ‘আমার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। পুলিশই আমার ছেলেকে খুন করেছে।’’ ছেলের মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন তাঁর মা। তাঁর দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এই খুনের তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ দেহ নেবেন না। অক্ষয়ের মায়ের দাবি, জেলের মধ্যে পুলিশ তাঁর ছেলেকে অত্যাচার করত। মারধরও করা হত। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অক্ষয়ের মা বলেন , তাঁর ছেলে বাজি ফাটলে রাস্তায় যেতে ভয় পেত, সে কী করে পুলিশের বন্দুক কেড়ে নিয়ে গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটাল ?
আগস্টের ১২ তারিখে স্কুলের শৌচাগারে চার বছরের দুই নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে উত্তাল হয় বদলাপুর। বদলাপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সাফাইকর্মী ছিল অক্ষয় শিন্ডে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্কুলের চার বছরের দুই ছাত্রীর উপর লাগাতার যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল সে। তদন্তে জানা গেছে, অন্তত ১০-১২ দিন ধরে ওই দুই শিশুর উপরে যৌন নিগ্রহ চালিয়েছিল অক্ষয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্রের বদলাপুর। অভিযোগ, পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয় জনতা। দিনের পর দিন রেল অবরোধ, বনধও ঘোষণা করা হয়। চাপের মুখে পড়ে ঠাণের পুলিশ কমিশনার, সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর ও অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করেন উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগও ওঠে ওই নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে। এরপরেই নড়েচড়ে বসে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। পুলিশ ছাড়াও এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’ গঠন করেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ । গত ১৭ আগস্ট গ্রেফতার হয় অক্ষয়। ২৩ সেপ্টেম্বর এনকাউন্টারে মৃত্যু হল শিন্ডের ।