বিজেপি’কে হারাতে হলে লড়তে হবে। কংগ্রেসকে, কোনও আঞ্চলিক দল নয়। সম্প্রতি রাজস্থানে তিন দিনের চিন্তন শিবিরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি।
রবিবার রাহুলের এই বক্তব্যকেই খণ্ডন করে পাল্টা দিল তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র ‘চিন্তনের চিন্তা’ শিরোনামে সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করা হল।
লেখা হল, ‘কংগ্রেসই যে বিজেপির আসল বিরোধী, সেটা এখন আর মানুষ বিশ্বাস করে না। মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বিরোধী মুখ। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস এখন অপাংক্তেয়।’
শুধু দলকেই নয়, নির্দিষ্টভাবে রাহুল গান্ধির বক্তব্যকে নিশানা করে লেখা হয়েছে, কংগ্রেস সাংসদের এহেন মন্তব্য তৃণমূল বা আঞ্চলিক দলগুলিকে ছোট করাই নয়, কংগ্রেসের জন্যও বেশ বিড়ম্বনার।
রাজস্থানের উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের শেষ দিন ছিল রবিবার।
ওইদিন নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল গান্ধি স্বীকার করে নেন, কংগ্রেস জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কিন্তু সেইসঙ্গে চিনি এটাও জানান, বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র কংগ্রেস। কোনও আঞ্চলিক দল নয়।
কারণ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা আদর্শের। আঞ্চলিক দলগুলির কোনও আদর্শ নেই। ফলে দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপিতে সরাতে গেলে কংগ্রেসকে কংগ্রেসের মতো করে লড়াই করতে হবে।
প্রসঙ্গত দিনকয়েক আগে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট করে লড়াই করা উচিত।
কিন্তু কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে এসে রাহুল গান্ধি সেই পরামর্শ কার্যত নস্যাৎ করে দিলেন। রাহুলের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় পাল্টা তোপ দাগল তৃণমূল।
সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসের উদ্দেশে লেখা হল, নিজের ঘরই বিধ্বস্ত, আর সে কি না অন্যের ঘরে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে, অন্যের ভুল ধরার ফন্দি খুঁজছে।
এর উদ্দেশ্য একটাই, নিজের দোষ ঢেকে অন্যকে দোষী করে তোলা। যে কাজটা কংগ্রেসের তথাকথিত চিন্তন শিবিরে বহু চিন্তা করে সোনিয়াপুত্র রাহুল গান্ধি সুচারু ভঙ্গিতে করার চেষ্টা করছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে আসছেন বিজেপিকে হঠাতে গেলে আঞ্চলিক দলগুলিকেই জোট বাঁধতে হবে।
কারণ কংগ্রেস মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। এই মর্মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনও ইস্যুতে বিরোধিতা করতে হলে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলেন।
তৃণমূল নেত্রীর সেই চিন্তারই অনুসারী তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’ তাই রাহুল গান্ধির স্বমহিমা প্রকাশ করে।
কংগ্রেসকেই প্রধান বিরোধী বলে দাবি করার পরেই সোচ্চার হল তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের পরিস্থিতি কেমন, তা প্রতিটি লাইনে উল্লেখ করে রাহুল গান্ধির বক্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হল তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রে।