• facebook
  • twitter
Thursday, 17 April, 2025

ওয়াকফ বিলের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে কংগ্রেস

এই বিল বিশেষ করে তাঁদের সাহায্য করবে, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিকে রয়ে গিয়েছেন। যার জেরে তাঁদের মতামত প্রকাশ এবং সুযোগের থেকে বঞ্চিত করা হত।

ফাইল চিত্র

ওয়াকফ বিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে কংগ্রেস। সংসদের উভয় কক্ষে এই বিল নিয়ে তুমুল বিরোধিতার পর এবার আইনি পথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সংসদে পাশ হওয়ার ওয়াকফ সংশোধনী বিলের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়টি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন জয়রাম রমেশ। লোকসভার পর রাজ্যসভায় ম্যারাথন চর্চা শেষ হলে শুক্রবার ভোরে বিলটি পাশ হয়। এরপরই একটি পোস্টে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ লেখেন, ‘কংগ্রেস অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ বিলের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করবে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী, ভারতের সংবিধানে থাকা বিধান ও নীতির উপর ভিত্তি করে মোদী সরকারের সমস্ত আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব হবে।’
 
সংসদে ওয়াকফ বিলের আলোচনায় বিরোধী দলগুলি তীব্র আপত্তি জানায়। বিলটিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেন বিরোধী সাংসদরা। পাল্টা সরকারের দাবি, এই সংস্কারের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপকার হবে। তুমুল বিতর্কের পর রাজ্যসভায় ১২৮ জন সদস্যের সমর্থন এবং ৯৫ জন সাংসদের বিরোধিতায় বিল পাশ হয়। তার আগে প্রায় দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা চর্চার পর বৃহস্পতিবার ভোরে লোকসভায় পাশ হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল। ২৮৮ জন সদস্য বিলের পক্ষে এবং ২৩২ জন বিলের বিপক্ষে ভোট দেন।  
 
নতুন বিলে ওয়াকফ কাউন্সিলে এই প্রথম বার দু’জন অমুসলিমকে স্থান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি মুসলিমদের স্বাধীন ধর্মাচরণের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। 
 
দলের রাজ্যসভা সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির দাবি, ধর্মীয় কোনও প্রথা বা ব্যবস্থা যদি সেই ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়, তা ভারতীয় সংবিধানের ২৫ এবং ২৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে তা সুরক্ষিত। যদি আইন কোনও ধর্মের প্রতিষ্ঠান চালাতে বাধা দেয়, সেই আইন অসাংবিধানিক। ওয়াকফ মুসলিমদের ধর্মাচরণ প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নতুন সংশোধনী বিলে তাতে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। তাই আদালতে এই বিলকে চ্যালেঞ্জ করা হবে। 
 
এদিকে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ হওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সমাজ মাধ্যমে মোদী লেখেন, ‘সংসদের উভয় কক্ষে ওয়াকফ সংশোধনী বিল এবং মুসলিম ওয়াকফ বাতিল বিল পাশ হয়েছে। আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচার এবং স্বচ্ছতার এক যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে এটি। এই বিল বিশেষ করে তাঁদের সাহায্য করবে, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিকে রয়ে গিয়েছেন। যার জেরে তাঁদের মতামত প্রকাশ এবং সুযোগের থেকে বঞ্চিত করা হত। কয়েক দশক ধরে, ওয়াকফ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার অভাব ছিল। সংসদে পাশ হওয়া আইনগুলি ওয়াকফে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে এবং জনগণের অধিকারও সুরক্ষিত করবে।  ‘
 
এদিকে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র আর এক শরিক ডিএমকে-ও ইতিমধ্যেই ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। সেটি এখনও বিচারাধীন রয়েছে।