হােয়াটসঅ্যাপে আড়িপাতা বা তথ্য পাচার নিয়ে বিতর্কের জবাব দিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থার পক্ষে জানানাে হয়েছে, এবিষয়ে তারা মে মাসেই ভারত সরকার ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
হােয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভারতে সাংবাদিক ও বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের কর্মীদের তথ্য পাচার করছে পরিষেবা প্রদায়ক সংস্থাগুলি ইজরায়েলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কিন্তু হােয়টসঅ্যাপ সংস্থা গ্রাহকদের ব্যক্তিগত গােপনীয়তার অধিকার রক্ষায় সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাকেই সংস্থা তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব বলে মনে করে থাকে। চিহ্নিত গ্রাহকদের অসুবিধা সৃষ্টিকারী হিসেবে আন্তর্জাতিক চর সংস্থা এনএসও গ্রুপ দায়ী বলে আদালতে জানানাে হয়েছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরােধ করা হয়েছে।
সংস্থার পক্ষে জানানাে হয়েছে, হােয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য হ্যাকারদের নজর থেকে সুরক্ষিত করার বিষয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগের অংশীদার তারাও। তবে হােয়াটসঅ্যাপ সংস্থা তার সকল গ্রাহকের তথ্য গােপন রাখার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানানাে হয়েছে।
কংগ্রেস দলের পক্ষে গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট অ্যাপ থেকে তথ্য পাচারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদলত যেন এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার আবেদন জানানাে হয়েছে। কংগ্রেসের পক্ষে জানানাে হয়েছে, সরকারি সংস্থা সিইআরটি-ইন কে মে মাসে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানানাে হয়। কিন্তু তারা হ্যাকের জন্য যে ‘পেগাসাস’ নামক স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয় বা তথ্য পাচারের বিস্তারিত বিষয়ে কোনও কথাই জানায়নি। স্পাইওয়্যার প্রযুক্তির ক্ষতিকারক দিকগুলি সম্পর্কে জানায় কিন্তু ভারতীয় গ্রাহকদের গােপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়ে নীরবতা পালন করেছে সংস্থাটি বলে অভিযােগ।
এব্যাপারে কেন্দ্রীয় যােগাযােগমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ হােয়াটসঅ্যাপ কর্তপক্ষের বিস্তারিত রিপাের্ট চেয়ে পাঠানাের পরই সংস্থার পক্ষে ভারতীয় গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত করার বিষয়ে যাবতীয় তথ্য জানানাে হয়। সংস্থার পক্ষে জানানাে হয়েছে, ভারতীয় সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের ওপরই ইজরায়েলের স্পাইওয়্যার পেগাসাস মাধ্যমে নজরদারি চালানাে হচ্ছে। পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি এই ব্যবস্থা প্রয়ােগের দ্বারা ভারতীয় সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের তথ্য পাচারে সুবিধা করে দিয়েছে।
রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইটে জানান, হােয়াটসঅ্যাপের গ্রাহকদের তথ্য পাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দোষারােপ করার কোনও ভিত্তিই নেই। বিরােধীদের সরকারের বিরুদ্ধে এব্যাপারে প্রচার বিভ্রান্তিমূলক। শনিবার কংগ্রেসের পক্ষে হােয়াটসঅ্যাপে আড়িপাতা এবং তথ্য পাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করা হয়েছে। কারণ কে বা কারা বেআইনি স্পাইওয়্যার সংগ্রহ করল এবং বেআইনি নজরদারির কাজে ব্যবহার করল সে বিষয়ে সরকার কোনও কিছুই জানাচ্ছে না। সরকার তার নীতিগত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ এবং বিচ্যুত।
তবে হােয়াটসঅ্যাপ সংস্থার পক্ষে জানানাে হয়েছে, কোনও অজ্ঞাত ব্যক্তির মাধ্যমেই এই তথ্য পাচারের কাজ করা হয়েছে ইজরায়েলি স্পাইওয়ারের দ্বারা। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা জানান, মে মাসেই হােয়াটসঅ্যাপ সংস্থা ব্যক্তির গােপনীয়তার অধিকার রক্ষায় কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা ভারত সরকার ও আন্তজাতিক সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। কিন্তু বিজেপি সরকার সংশ্লিষ্ট তথ্য জানানাের বিষয়ে কোনও সৎসাহস দেখাতে পারছেনা। হােয়াটসঅ্যাপ স্পাইগেট নিয়ে-কে জিওআই কিনল এবং তা ব্যবহার করল? মে মাসে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফেসবুক সংস্থাটি সরকারকে জানানাে সত্ত্বেও তা সরকার দেশের মানুষকে জানালাে না কেন ? সরকার একাজে যুক্তদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাও জানাচ্ছে না বলে তিনি অভিযােগ করেন।
কেন্দ্রীয় সরকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারতীয় গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব সে বিষয়ে বিস্তারিত ৪ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটিকে বলে জানা গিয়েছে।