আজ আস্থা ভােট, হবে লাইভ টেলিকাস্ট : ‘সুপ্রিম’ রায়

কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চভাণ, কে সি ভেনুগোপাল এবং অন্যরা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পাস করার পরে আনান্দ উদযাপন করছেন। (Photo: IANS)

বুধবার মহারাষ্ট্রে আস্থা ভােটের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গােপন ব্যালটে ভােট হবে না। প্রােটেম স্পিকার নিযুক্ত করতে হবে। তিনি শপথগ্রহণ করানাের পর বিকেল পাঁচটায় হবে আস্থা ভােট। আস্থা ভােটের লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশ বলেছে, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে দেবেন্দ্র ফড়নবীশ সরকারকে। প্রথমে রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি অবিলম্বে একজন প্রােটেম স্পিকার নিযুক্ত করবেন। তিনি বিকেল পাঁচটার মধ্যে বিধায়কদের শপথ গ্রহণ শেষ করবেন। তার পরই হবে আস্থা ভােট। তবে গােপন ব্যালটে নয়, খোলা ব্যালটেই আস্থা ভােট করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আস্থা ভােটের প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘােড়া কেনাবেচা রুখতে অন্তবর্তী নির্দেশের প্রয়ােজন ছিল বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

রবি ও সােম, পর পর দু’দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামানার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে চলেছে দীর্ঘ শুনানি। অবিলম্বে আস্থা ভােটের ব্যবস্থা করা হােক, শীর্ষ আদালতে দায়ের করা আবেদনে এমনই জানিয়েছিল বিজেপি বিরােধী তিন দলের জোট। বর্তমানে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন দেবেন্দ্র ফড়নবীশের তরফে পাল্টা সওয়াল করা হয়, ‘রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত সত্বঃসিদ্ধ। তাঁকে আস্থা ভােট নিয়ে আদলতে কোনও নির্দেশ দিতে পারে না’। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই মামলায় রবিবারের মতাে সােমবারের শুনানিতেও বারবার উঠে এসেছে রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন।


এদিনও কংগ্রেস-এনসিপির আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি ও শিবসেনার আইনজীব কপিল সিব্বাল দাবি করেন, রাজ্যপাল এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছেন যা উড়িয়ে দিয়েছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। সওয়ালের শুরুতেই তিনি দু’টি চিঠির প্রতিলিপি তুলে দেন বিচারপতিদের হাতে। একটি চিঠিতে গত ২৩ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

অন্য চিঠিটির প্রতিলিপি এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের, যিনি তাঁর দিকে থাকা ৫৪ জন বিধায়কের সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে। তাঁর যুক্তি, মাননীয় বিচারপতিরা ঘােড়া কেনাবেচার কথা শুনেছেন, এখানে গােটা আস্তাবলটাই বিক্রি হয়ে যেতে পারত। যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলি পালবদল করছিল, সেখানে রাজ্যপাল কীভাবে বুঝবেন যে ভবিষ্যতে কী হবে? তাঁর কাছে যে প্রামাণ্য দলিল (ফড়নবীশকে লেখা অজিত পাওয়ারের চিঠি) ছিল, সেই নথির ভিত্তিতেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্ত পুরােপুরি সঠিক। এমন কোনও কারণ ছিল না, যেখানে এই সমর্থনের চিঠিকে রাজ্যপাল সন্দেহের চোখে দেখবেন।

এর পরেই ফড়নবীশের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রােহাতগি অভিযােগ করেন, এটি পারিবারিক শত্রুতার ঘটনার একটি উদাহরণ। একজন পাওয়ার আমার সঙ্গে আছেন, অন্য পাওয়ার অন্য পক্ষ আছেন। আমি রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলাম ১৭০ জন বিধায়কের সমর্থন নিয়ে। কেউ বলেননি বিধায়কদের সমর্থনের চিঠি জাল। আসলে অন্য পাওয়ার ও তার সহযােগিরা চেষ্টা করছে ঘােড়া কেনাবেচা করতে।

রাজ্যপালকে আক্রমণ পুরােপুরি উদ্দেশ্যপ্রণােদিত। তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তােলা যায় না। তিনি কখন কী ভাবে আস্থা ভােট করবেন, সেটাও তাঁর এক্তিয়ারভুক্ত। আস্থা ভােটের দাবি তুললেই তা করা যায় না। আগে প্রেটেম স্পিকার নিয়ােগ করতে হবে। তিনি বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। তারপরে হতে পারে আস্থাভােট। তা না করে শুধু রাজ্যপালকে নিশানা করা হচ্ছে  এই অবস্থায় রাজ্যপালকে আস্থা ভােট নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া যায় না।