প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বিতর্কের মধ্যেই প্রাথমিকের ডিএলএড মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নরসিংহ ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০২২ সালে প্রাথমিক নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন ডিএলএড কোর্সে প্রশিক্ষণরত প্রথম বর্ষের উত্তীর্ণরাও। ফলে প্রাথমিকে নিয়োগের জট কাটল।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাজ্যের ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এরপর শুক্রবার এ রাজ্যের প্রাথমিক নিয়োগ নিয়ে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০২২ সালের নিয়োগে কাদের অংশগ্রহণ বৈধ, সেই নিয়ে একটি মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। পরে সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টে যায়। শুক্রবার সেই মামলার রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নরসিংহ ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১১ হাজার ৭৫৮ পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ২০২০-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা। সেই সময় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, মামলাকারীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। এরপরেই জটিলতা বাড়ে। নির্ধারিত প্রশিক্ষণ শেষ না করে কীভাবে প্রার্থীদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন ২০২০ সালের আগের প্রশিক্ষিতরা।
আদালত সূত্রের খবর, ২০২২ সালে ১১ হাজার ৭৫৮ টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিএলএডদের পাশাপাশি ডিএলএড কোর্সের প্রথম বর্ষে উত্তীর্ণরাও আবেদন করতে পারবেন। পর্ষদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। সেই মামলায় আবেদনকারীদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলাকারীরা ডিভিশন বেঞ্চে গেলে, ওই বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেয়।
তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেয়। এরপরই মামলাটি যায় সুপ্রিম কোর্টে। এদিন সেই মামলাতেই বিচারপতি পিএস নরসিংহ-র বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের সময় যাঁরা ডিএলএড পাশ করেননি, অর্থাত যাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষণরত বা পাঠরত ছিলেন, তাঁরাও চাকরির সুযোগ পাবেন।
ইতিমধ্যে প্রায় ৯৬০ জন মামলাকারী নিয়োগের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা আদৌ নিয়োগের যোগ্য কি না, তা রায়ের উপর নির্ভর করছিল। শুক্রবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, তাঁদের নিয়োগ করা যাবে।সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর এবার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পথে রাজ্য সরকার।