সামনেই চরম বিপদ! পৃথিবীর বুকে ধেয়ে আসতে পারে রহস্যময় এক বস্তু। ধ্বংস হয়ে যেতে পারে মানব সমাজের গোটা সৃষ্টি। আচমকা নিজের কক্ষপথ থেকে ছিঁটকে বেরিয়ে আসছে এই অজানা বস্তুটি। সিডব্লিউআইএসসিজে ১২৪৯ নামের এই রহস্যময় বস্তুটির গতিবেগ ঘন্টায় ১৬ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি। আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে যে কোনও মুহূর্তে দুটি ছায়াপথের মধ্যবর্তী ইন্টারগ্যালাকটিক স্পেসে বেরিয়ে আসতে পারে সেটি। সম্প্রতি নাসার টেলিস্কোপে এই চাঞ্চল্যকর গতিবিধি ধরা পড়েছে। যা নিয়ে তোলপাড় সৌরজগতের বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
জানা গিয়েছে, নাসার বিজ্ঞানীরা কয়েক বছরে আগে একটি রহস্যময় বস্তুকে দ্রুত গতিতে ছুটে আসার দৃশ্য লক্ষ্য করেন তাঁদের শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্রে। যার গতিবেগ ছিল অস্বাভাবিক। কিন্তু কেন এই অস্বাভাবিক গতি? এবিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন নাসার জ্যোতির্বিদ্যা এবং জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা বিভাগের গবেষক কাইল ক্রেমার। তিনি বলেন, একটি কৃষ্ণ গহ্বর এবং নক্ষত্র মুখোমুখি হলে এরকম অস্বাভাবিক গতিশীলতা দেখা যায়। আর অস্বাভাবিক গতির কারণে সেটি ক্লাস্টারের বাইরে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার ‘ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডস: প্ল্যানেট ৯’ প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা এই বস্তুটিকে তার নিজের কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে আসার দৃশ্য চাক্ষুষ করেছেন।
কিন্তু এই ‘ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডস: প্ল্যানেট ৯’ আসলে কী? এর কাজ কী? জানা গিয়েছে, নবম গ্রহ হিসাবে প্লুটো নিজের কৌলীন্য হারাবার পর বিজ্ঞানীদের ধারণা হয়েছিল, সৌরজগতের বাইরের অঞ্চলে যে কোনও একটি কাল্পনিক গ্রহ থাকতে পারে। যাকে সাধারণত প্ল্যানেট ৯ নামে ডাকে নাসা। এই গ্রহটি কোথায় আছে, সেটি খুঁজে বার করার উদ্দেশ্যেই এই ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডস: প্ল্যানেট ৯ প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই প্রকল্পটিতে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে সমস্ত নাগরিক বিজ্ঞানীরা এক হয়ে সৌরজগতের নিকটতম প্রতিবেশী ও ছায়াপথের পিছনের নানা অজানা ক্ষীণ বস্তুগুলি আবিষ্কার করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইনফ্রারেড আলোয় তোলা মহাকাশের বেশ কিছু ছবি নাসার হাতে আসে। ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডসের নাগরিক বিজ্ঞানী মার্টিন কাবাটনিক, থমাস পি বিকল এবং ড্যান ক্যাসেলডেন সেগুলি জুড়ে একটি ক্ষীণ ও দ্রুত গতিশীল বস্তু দেখতে পান।
কিন্তু এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করা এই নাগরিক বিজ্ঞানীরা আসলে কারা? এঁরা আপনার আমার মতো সাধারণ নাগরিক। অর্থাৎ যে কোনও নাগরিক, গবেষক, বিজ্ঞানী অথবা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা যে কেউ এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারেন।
তবে সত্যিই কি বস্তুটি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে পারে? সেবিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন নাসার বিজ্ঞানীরা। এর উত্তর পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এজন্য জোরদার গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা।