বিভিন্ন সুত্র ও সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী ফের ভারতীয় এলাকা দখল করল চিন। পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্টে ১৪-এ ফের ঘাঁটি গেড়েছে চিন। এর ফলে ভারতীয় সেনার টহলদারিতে বাধা তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় সেনা কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছিল চিনের লাল সেনা। তাতে ভারতীয় জওয়ানরা বাধা দেন। এর ফলে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে, যাতে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। চিনের পক্ষেও হতাহতের সংখ্যা কম নয়, যদিও চিন সেটা কোনও দিনই স্বীকার করেনি। তখনকার মতো পরিকাঠামো নির্মাণে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে চিন পিছু হঠলেও ১০ দিন পর তারা ফের সেই এলাকায় ফিরে এসেছে বলে খবর।
সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী ভারতীয় সেনা রিপোর্ট করেছে যে, পিপি ১৪-তে চিনা ছাউনির অস্তিত্ব দেখা গেছে। এই ছবি ধরা পড়েছে স্যাটেলাইট ছবিতেও। চিনের পিপি ১৪-তে আস্তানা গেড়ে বসার কারণে পিপি-১০, ১১, ১২ এবং ১৩-তে যাতায়াতে বাধা পাচ্ছে ভারতীয় সেনা। যার ফলে কয়েকশ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি বন্ধ রাখতে হয়েছে।
সাম্প্রতিক লাদাখ সফরে গিয়েছিলেন ভারতের সেনাপ্রধান এম এমনারাভানে। সেখান থেকে হালহকিকত দেখে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছে। গোটা বিষয়টা নিয়ে রাজনাথ সিং কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অস্ত্র সহ চিনা সেনাকে দেখা গেছে। ওদের পেছনে মোতায়েন রয়েছে আরও বেশি সংখ্যক চিনা সেনা। গালওয়ান ও প্যাংগং লেক এলাকা ছাড়াও ডেপসাং এলাকাতেও চিনা গতিবিধি লক্ষ্য করা গেছে। ডেপসাং এলাকার একটি বড় অংশে চিনা অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধীরা।
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে লাদাখের মতো দুর্গম এলাকায় সেনা ও রসদ দ্রুত পৌছে দিতে ডেপসাং-এর কাছে সম্প্রতি ভারত একটি এয়ারস্ট্রিপ বানিয়েছিল। এই নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে চিন। তবে বেজিংকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত। চিনে অবস্থিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি এক সাক্ষাৎকারে পিটিআইকে জানিয়েছেন, বেজিংকে বুঝতে হবে লাদাখে স্থিতাবস্থার উপর আঘাত হানলে তার ফল ভোগ করতে হবে তাদের।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর উক্ত এলাকায় টহলদারিতে যদি বাধা দেওয়া হয়, তাহলে ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সংঘাত বন্ধ হবে না। বুধবার থেকেই লাদাখ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন শুরু করেছে ভারত। বেশি উচ্চতায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা ও কমান্ডোকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।
সেনা সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই কাশ্মীর থেকে দু’টি প্যারা কমান্ডো ইউনিটকে লাদাখে পাঠানো হয়েছে। শ্রীনগর ও লেহ থেকেও সাত ব্যাটালিয়ন সেনা লাদাখে পৌঁছেছে। এছাড়াও দিনভর চক্কর কাটছে ভারতীয় বায়ু সেনার বিমান।
পাশাপাশি, লকডাউনে আটকে পড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্ত হাজার গোর্খা জওয়ানদের নেপাল থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এঁরা পাহাড়ি পরিবেশে যুদ্ধে পটু। গোর্খা রেজিমেন্টের ৪০ হাজার গোর্খা ভারতীয় সেনার অঙ্গ। নেপাল থেকে এঁদের ফিরিয়ে আনতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এঁরা ফিরলে এঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।