আজই প্যাঙ্গং লেকের দক্ষিণ উপকূলে চুসুল সেক্টরে চিন-ভারত সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠক। লাদাখ সীমান্তে শান্তি ফেরাতে এই নিয়ে সপ্তমবার বৈঠকে বসছে ভারত ও চিন। কিন্তু তার আগেই খবর মিলেছে উত্তর প্যাঙ্গং লেকে নতুন করে সেনা মােতায়েন করেছে চিন।
পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকায় সেনার বিন্যাস বদলাচ্ছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। দক্ষিণ প্যাঙ্গং উপকূলেও তৎপর চিনের বাহিনী। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানাচ্ছে- মুখােমুখি অবস্থান থেকে সেনা সরানাে অথবা সেনা পিছনের কোনও সদিচ্ছাই নেই লাল ফৌজের। তাদের হাবভাবেই এটা স্পষ্ট। উল্টে শীতের আগে পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকার দখল নিতে মরিয়া চিনের বাহিনী।
ফিঙ্গার পয়েন্ট ৪ এলাকার দু’দিকেই ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় নতুন করে সেনা মােতায়েন শুরু করেছে চিন। প্রায় ২০০ সেনাকে তারা সরিয়ে এনেছে ফোরফ্রন্টে। ভারতীয় বাহিনীর মুখােমুখি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক বসিয়ে সেনার সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে চিন।
গত ২৯-৩০ আগস্ট থেকে শুরু করে জ্জ সেপ্টেম্বর অবধি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা তথা এলএসি বরাবর চারটি চিনা আগ্রাসনের ঘটনা ঘটেছে। সেনা সূত্র জানাচ্ছে ৪৫ বছরের রীতি ভেঙে শূন্যে প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলিও ছুড়তে দেখা গিয়েছে চিনের সেনাকে।
প্যাঙ্গং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার পয়েন্ট তিন ও চারের মাঝে ঘটেছে এই ঘটনা। ভারতীয় নিয়ন্ত্রণাধীন পাহাড়ি এলাকা দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে লাল সেনা। প্যাঙ্গং লেকের দক্ষিণে চুসুল সেক্টরে এখন দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে ব্যবধান তিনশাে মিটারেরও কম। ফিঙ্গার চার থেকে ফিঙ্গার আট পর্যন্ত চারটি পয়েন্ট এখনও চিনের বাহিনী বসে রয়েছে। ফিঙ্গার পয়েন্ট চার-এর উঁচু পাহাড়ে ভারতীয় সেনা মােতায়েন থাকলেও পাদদেশে যুদ্ধ ট্যাঙ্ক নিয়ে এগিয়ে এসেছে চিনের বাহিনী।
মস্কোয় সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের আলােচনা টেবিলে ভারত ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মুখােমুখি আলােচনা টেবিলেও বরফ গলেনি। শেষবার চুসুল সীমান্তে দুই দেশের সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরেও প্যাঙ্গং লেক ও সংলগ্ন এলাকা থেকে সেনা সরানাে ও সেনার সংখ্যা কমানাে– কোনও টাই করেনি চিনের সেনাবাহিনী। এখন আবার নিজেদের মধ্যে যােগাযােগ বাড়াতে ওই এলাকায় ফাইবার কেবল বসানাের কাজ শুরু করেছে তারা।
ভারতের সেনা সূত্র জানাচ্ছে, এই ধরনের কেবল মারফত খুব দ্রুত খবর আদানপ্রদান করা যায়। রেডিও যােগাযােগের চেষ্টা করলে তা ধরা পড়বে ভারতীয় র্যাডারে। কিন্তু ফাইবার কেবলে সে ভয় নেই।
দক্ষিণ প্যাঙ্গং লেকের ৭০ কিলােমিটার জায়গাজুড়ে মুখােমুখি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক গুজিয়ে বসে গেছে ভারত ও চিন। দক্ষিণ চুসুল, মলডাের কাছে লাল সেনার তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। প্যাঙ্গং হ্রদের উত্তর সীমায় তিন নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের কাছে নতুন করে সামরিক কাঠামাে তৈরিতে লেগে পড়েছে লাল ফৌজ।
