• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

ভারতের ৩৮ হাজার বর্গ কিলােমিটার জমি জবরদখল করেছে চিন: রাজনাথ

স্বীকারােক্তি এল অবশেষে। চিন যে ভারতের জমি বেআইনিভাবে দখল করেছে সেটা শেষ পর্যন্ত স্বীকার করে নিলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।

কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। (File Photo: IANS)

স্বীকারােক্তি এল অবশেষে। চিন যে ভারতের জমি বেআইনিভাবে দখল করেছে সেটা শেষ পর্যন্ত স্বীকার করে নিলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তবে, চিনের এই দখলদারি কখন কিভাবে তা সংসদে স্পষ্ট করেননি তিনি। 

বৃহস্পতিবার লাদাখ ইস্যু নিয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, চিন এখনও বেআইনিভাবে কেন্দ্রশাসিত লাদাখে প্রায় ৩৮ হাজার বর্গ কিলােমিটার জমি দখল করে রেখেছে। পাকিস্তান তথাকথিত সিনাে-পাকিস্তান এলাকা থেকে আরও ৫ হাজার ১৮০ বর্গ কিলােমিটার জায়গা চিনের হাতে তুলে দিয়েছে। এছাড়াও চিন ভারতের দখলে থাকা আরও ৯০ হাজার বর্গ কিলােমিটার জমিকে নিজেদের জমি বলে দাবি করছে। 

তবে, কোন আমলে ভারতের কোন জমি চিন দখল করেছে তা এদিন স্পষ্ট করেননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে, অন্যভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, কংগ্রেসের আমলে চিন যতটা ভারতের এলাকা দখল করেছিল, বর্তমানে ঠিক সেটাই আছে। তবে নতুন করে কোনও জমি দখল করেছে কিনা চিন তার কোনও তথ্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেননি। তবে, চিন ১৯৯৩ এবং ১৯৯৬ সালে হওয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে সম্মান করছে না বলে রাজনাথ এদিন অভিযােগ করেন।

দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা বজায় রাখার লক্ষ্যে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে সংসদের অধিবেশনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, লাদাখে চিন-ভারত সীমান্তে উত্তেজনার পরিবেশ রয়েছে। তবে এমন কোনও শক্তি পৃথিবীতে নেই, যারা সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় বাহিনীর টহলদারি আটকাতে পারবে। 

তিনি বিরােধী সাংসদদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘সীমান্তে কোনও শক্তি সেনাবাহিনীর টহলদারি আটকাতে পারবে না। ভারত সমস্ত ধরনের পরিস্থিতি মােকাবিলায় প্রস্তুত। চিনা আগ্রাসনের জেরে পূর্ব লাদাখে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর জওয়ানদের টহলদারির নিয়মে কোনও পরিবর্তন করা হবে না। 

প্রতিবেশি চিনকে পরােক্ষে কঠোর বার্তা দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, সীমান্তে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরির নেপথ্যে চিনের বেআইনি আগ্রাসন নীতি রয়েছে। ভারতীয় সেনা কঠোর হাতে দমন করছে শুধু নয়, চিনের সেনাবাহিনীর গতিবিধির ওপর নজর রাখছে। যুদ্ধ শুরুটা আমাদের হাতে থাকলেও যুদ্ধের শেষটা কিন্তু আমাদের হাতের মধ্যে থাকবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ সমঝােতায় যেতে চাই। 

তাঁর কথায়, ‘সমগ্র পৃথিবী কোভিডে আক্রান্ত। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখন্ডে ঢুকে চিন শান্তি ভঙ্গ করছে, যা সত্যিই আমাকে অবাক করে। তবে আমাদের মনােভাবের পরিবর্তন ঘটেছে। তবুও আমি দেশের ১৩০ কোটি দেশবাসীকে বলতে চাই, কোনও কিছুর কারণে আমরা দেশকে ছােটো হতে দেব না। আমরা নিজেরা কারুর কাছে মাথা নত করব না। পাশাপাশি আমাদের এমন কোনও ইচ্ছাও নেই যে কাউকে আমাদের সামনে মাথানত করতে বাধ্য করব।’

দেশের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা এ কে অ্যান্টনি বলেন, ‘চিনা সেনা সত্তিই কি সীমান্তে কয়েকটি জায়গায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে টহল দিতে দিচ্ছে না।’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও জবাবে স্পষ্ট করে দেন, সেনাবাহিনীর টহলদারির যে নিয়ম যুগ যুগ ধরে চলে আসছে তা সু-সংজ্ঞায়িত। কোনও শক্তি নেই ভারতীয় সেনাকে টহলদারিতে বাধা দেবে। দেপেসাং উপত্যকা, গালওয়ান, হট স্প্রিং, গােগরা, প্যাংগং লেকের উত্তরাংশে ভারতীয় বাহিনীকে টহলদারি দিতে দিচ্ছে না চিন।

মে মাসে চিনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু পরে তারা নিজেদের জায়গায় ফিরে যায় নি। ভারতীয় বাহিনীর পদক্ষেপের কারণে চিনা সেনা প্যাংগং লেকের দক্ষিণাংশে বিতর্কিত এলাকা দখল করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী কঠোর হাতে পর্বতের উঁচুশৃঙ্গগুলি দখল করে উঁচু জায়গা থেকে চিনের সেনাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘চিন যেটা বলছে, আর চিন যেটা করছে তার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। কেননা গালওয়ানে ও প্যাংগং লেক সংলগ্ন এলাকায় চিন প্ররােচনামূলক সেনা আগ্রাসন ঘটিয়েছে’।