পরিত্যক্ত কুয়োয় পড়ে গিয়েছিল এক শিশু। চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে একে একে কুয়োয় ঝাঁপ দেন ৭ জন। কিন্তু কেউই আর সেই কুয়ো থেকে উঠতে পারেননি। শিশুটি সহ মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ায়। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, কাদামাটি এবং পাঁকের কারণে তৈরি বিষাক্ত গ্যাসই প্রাণ কেড়েছে ৮ জনের। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা যাবে।
বৃহস্পতিবার খান্ডোয়া জেলার কোন্ডাবত গ্রামে গাঙ্গৌর উৎসব ছিল। সকাল থেকেই উৎসবে মেতে ছিলেন গ্রামবাসীরা। গ্রামেই একটি বড় কুয়ো রয়েছে। সেটির জল ব্যবহার করা হয় না। গ্রামে কোনও পুজো বা উৎসব হলে প্রতিমা এবং যাবতীয় জিনিস ওই কুয়োয় ফেলা হয়। সেই কুয়োতেই ওই শিশুটি পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে একজন বিষয়টি লক্ষ্য করেন। তিনিই গ্রামবাসীদের জানান, শিশুটি কুয়োয় পড়ে গিয়েছে।
শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য প্রথমে একজন কুয়োয় লাফ মারেন। তিনি উঠছেন না দেখে আরও এক জন কুয়োয় নামেন। কিন্তু ওই ব্যক্তিও আর ওপরে ওঠেননি। এ ভাবে পর পর সাত জন নামেন কুয়োয়। কিন্তু কেউই আর কুয়ো থেকে উঠে আসতে পারেননি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের খবর দেন। পুলিশের তরফে দমকলে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, দমকল কাজ শুরু করার আগেই সকলে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন।
খান্ডোয়ার পুলিশ সুপার মনোজ রাই জানিয়েছেন, কুয়োয় জল বেশি ছিল না। কিন্তু কাদামাটি আর পাঁকে ভর্তি ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কাদামাটি এবং পাঁক মিশে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়েছিল। কুয়োয় থাকা সেই গ্যাসের কারণেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই আট জনের।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। মৃতদের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করেছেন তিনি। সোশাল মিডিয়ায় মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘এই কঠিন সময়ে শোকগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনা জানাই। মৃতদের পরিবার পিছু ৪ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছি।’