শিশুকে অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে আদালত বিবেচনা করতে পারে না। পাশাপাশি শিশুটি কার হেফাজতে থাকবে, সেই বিবেচনাও শিশুটির মানসিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল।আদালত জানায়, শিশু কোনও সম্পত্তি নয় যে তাকে ইচ্ছেমতো হেফাজতে রাখা যাবে। বিচারপতি এ এস ওকা এবং এ জি মসিহের বেঞ্চ জানায় যে, এই ধরনের বিষয়গুলির ক্ষেত্রে যান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না এবং আদালতকে মানবিক বিবেচনার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। ‘কাস্টডি’ তথা হেফাজত নিয়ে একটি ‘হেবিয়াস কর্পাস’ পিটিশনের উত্তরে এমনটাই জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
দেশের শীর্ষ আদালত জানায়, “আদালত যখন একজন নাবালকের বিষয়ে ‘হেবিয়াস কর্পাস’ নিয়ে কাজ করে, তখন আদালত শিশুটির উপর হেফাজতের ঝামেলার প্রভাব বিবেচনা না করে শিশুটিকে একটি অস্থাবর সম্পত্তি এবং হেফাজত হস্তান্তর সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করতে পারে না।”
সুপ্রিম কোর্ট দুই বছর সাত মাস বয়সী এক কন্যা সন্তানের হেফাজত সংক্রান্ত একটি মামলায় এই রায় দিয়েছে।শিশুটির মায়ের ২০২২ সালের ডিসেম্বরে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তারপর থেকে সে মাসির কাছেই বড় হচ্ছে। মাসিকেই সে চিনেছে, মাসির সাথেই শিশুটির আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
সম্প্রতি শিশুর কাস্টডি চেয়ে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে যায় শিশুটির বাবা। হাইকোর্ট শিশুটিকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাসে বিষয়টি শীর্ষ আদালতে পৌঁছায় এবং শীর্ষ আদালত সেই সময় হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, “এটা স্পষ্ট যে উচ্চ আদালত শিশুর কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করেনি। উচ্চ আদালত শুধুমাত্র একজন প্রাকৃতিক অভিভাবক হিসাবে পিতার অধিকারের উপর ভিত্তি করে শিশুর হেফাজত উল্লেখ করেছে। ” সুপ্রিম কোর্ট জানায় , শিশুর কল্যাণকে অগ্রাহ্য করার অনুমতি দেওয়া যাবে না।
শীর্ষ আদালত জানায়, “শিশুটি এক বছরের বেশি সময় ধরে বাবা এবং তার ঠাকুমা-ঠাকুরদাকে দেখেনি। দুই বছর সাত মাস বয়সে, যদি শিশুটির হেফাজত বাবা এবং দাদা-দাদির কাছে হস্তান্তর করা হয়, তবে শিশুটির পক্ষে তা খুবই দুঃখজনক হয়ে উঠবে, কারণ শিশুটি তাঁদের দীর্ঘ সময় দেখেনি।”
বেঞ্চ বলেছে, “আমরা আবেদনকারীদের শিশুর বাবা এবং দাদা-দাদীকে শিশুটির সাথে ১৪ দিনে একবার দেখা করার জন্য প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়ার প্রস্তাব করছি।”