গুয়াহাটি হাইকোর্টের একটি অডিটোরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ । রবিবার এই অডিটোরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি খােলাখুলি নিজের মত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু মানুষ এবং সংগঠনের বেপরােয়া এবং মারমুখী আচরণের সাক্ষী হচ্ছি আমরা যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে তাঁর যে বিচারব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা আছে এদিন তিনি তা সাফ জানিয়ে দেন। সেই সঙ্গে তিনি আশা করেন খুব শীঘ্র এই স্বৈরাচার দূর হবে এবং দেশের স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
এই প্রসঙ্গে রঞ্জন গগৈ বলেন, আমার আশা এ ধরনের ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনার পুনরাবৃত্তি আগামী দিনে ঘটবে না। বিচারব্যবস্থার উচ্চ আদর্শ এবং ঐতিহ্য এই পরিস্থিতি থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, ‘সরকারি দফতর গুলি যেভাবে চলে দেশের আদালতগুলির নীতি তাদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। সব স্তরের মানুষকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আমাদের রায় ও সিদ্ধান্তের উপর ভরসা করে সাধারণ মানুষ। সেই আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভর করেই টিকে রয়েছে বিচারব্যবস্থা। তাই কর্তব্যবােধ ভুললে চলবে না। বিচারব্যবস্থার মতাে পবিত্র সংগঠনের অংশ হতে পেরে তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলেও মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য দেশে এ মুহূর্তে নাগরিকপঞ্জির খসড়া, অযােধ্যার বিতর্কিত জমি সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা প্রধান বিচারপতির হাতে রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত বিচারপতি না থাকায় আদালতগুলিতে মামলার পাহাড় জমছে। এদিন সেই সমস্যার কথাও স্বীকার করে নেন গগৈ।
এ প্রসঙ্গে বলতে গয়ে তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন আদালতে এক হাজারেরও বেশি পঞ্চাশ বছরের পুরনাে মামলা জমে রয়েছে। ২৫ বছর ধরে জমে থাকা মামলার সংখ্যা দু’লক্ষেরও বেশি। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির সংখ্যা বাড়ানাে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছেন গগৈ।
এই নিয়ে নতুন বিল আনারও পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধান বিচারপতি পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের বিচারপতির সংখ্যা তিরিশ থেকে বাড়িতে তেত্রিশ করা যায় কিনা তা নিয়েও আলােচনা চলছে। তবে প্রধানবিচারপতির মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে আলােচনা। উল্লেখ্য, এবছরের ৭ নভেম্বর প্রধানবিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন রঞ্জন গগৈ ।