নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উত্তাল তামাম দেশ– তার মধ্যে উত্তেজনার পারদকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে নাগরিকপঞ্জি’কে দেশভাগের ক্ষতিকারক পরিকল্পনা বলে মন্তব্য করলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, শুধু ক্ষতিকারক পরিকল্পনা নয়, একটা অশুভ আতাতও বটে। তিনি অভিযােগ করে বলেন, নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার আদপে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ও ভারতীয় জনতা পার্টির বিভেদ সৃষ্টিকারী অ্যাজেন্ডার অংশ।
নাগরিকত্ব আইনকে সুস্পষ্ট বৈষম্যমূলক পরিকল্পনা বলে আখ্যা দিয়ে চিদম্বরম বলেন, প্রতিবেশি তিন দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে পালিয়ে আসা অ-মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা, মায়নমার ও ভুটানকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভারতে বসবাসকারী মুসলিমদের ওপর নাগরিকত্ব আইনের নেতিবাচক প্রভাব নিশ্চিতভাবে পড়বে, তাদেরকে নাগরিকত্ব আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে না। অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলাের মানুষদের নতুন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শুধুমাত্র মুসলিমদের বেআইনি অভিবাসী হিসেবে শণাক্ত করা হবে।
দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম বলেন, ‘নাগরিকত্ব আইন নিয়ে স্বভাবতই দেশের মুসলিমদের মধ্যে ভীতি ও অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার, ২০১০ ও জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার ২০২০ মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। নাগরিকপঞ্জির আওতায় প্রতিটি ভারতীয়কে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ভারতের নাগরিক– দ্বিচারিতার জায়গা হল, রাষ্ট্র যদি সন্দেহ করে দেশের কোনও ব্যক্তি নাগরিক নয়, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি যে দেশের নাগরিক নন, তা রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জির আওতায় নাগরিকের দায়িত্ব নিজেকে দেশের নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করা। অসমে ১৯,০৬,৬৫৭ মানুষকে নাগরিকপঞ্জির চুড়ান্ত তালিকাভুক্ত করা হয়নি– তাদের ভাগ্যে কি রয়েছে কেউ জানে না।
কয়েক হাজার পড়ুয়া নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টারের বিরােধিতায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন- মহাত্মা গান্ধি, জওহরলাল নেহরু, আম্বেদকরের ভারতকে রক্ষা করা তাদের লক্ষ্য। চিদম্বরম বলেন, ‘আব্রাহাম লিঙ্কনও সংবিধানকে রক্ষা করেছিলেন, ১৮৬৫ সালে। আমাদেরও লক্ষ্য ও কর্তব্য ভিন্ন কিছু নয়।