ছয় বছর আগে মারা যান তামিনাডুর একছত্র সাম্রাগী জয়ললিতা। আর তার পরেই শুরু হয়ে যায় তার সিংহাসনে বসার লড়াই। ২০১৬-র ডিসেম্বরে মারা যান এআইএডিএমকে-র নেত্রী জে জয়ললিতা।
সেই থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওরফে এদাপাদ্দি পালানস্বমী এবং পনির সেলভম ওরফে ইপিএস।
এবং আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওপিএস দু জনেই যৌথভাবে দলের শীর্ষ পদে ছিলেন। কিন্তু আর যেন দুই রাজার একসঙ্গে বসা সম্ভব নয়। আর তাই নিয়ে শুরু হল লড়াই।
সাত সকালে তপ্ত চেন্নাই । প্রধান বিরোধী দল এআইএডিএমকে-র শীর্ষপদের দখল নিয়ে প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী এদাপাদ্দি পালানস্বমী (ইপিএস) এবং ও পনির সেলভম (ওপিএস) গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। তবে এখনও গোলমাল থামেনি।
গত কয়েক দিন ধরেই দুই শিবিরের গোলমাল চলছিল। সোমবার সকালে এই গোলমালের মধ্যেই দলের অন্তর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইপিএস।
লড়াইয়ে কার্যত মুছে গিয়েছেন আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওপিএস।এ নিয়ে দীর্ঘ আইনি বিবাদের নিষ্পত্তি হয় গত সপ্তাহের সোমবার।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, দলের জেনারেল কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে একজনকে অন্তর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক বেছে নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল ইপিএস গোষ্ঠী।
সেই মতো সোমবার শহরের একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে বৈঠকের আয়োজন হয়। কিন্তু সেই বৈঠক আটকাতে গত শনিবার মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ওপিএস।
তাঁর বিশেষ অনুরোধে আজ সকালে দেড় ঘন্টা আগে বসে বিশেষ বেঞ্চ। সকাল ৯’টা ৫ মিনিট নাগাদ হাইকোর্ট বলে বৈঠক পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী চলবে। ফলে সেখানে হার হয় ওপিএসের।
এরপরই নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। ৯টা ২০ মিনিট নাগাদ বৈঠকের পৌরহিত্যকারী তামিল মোহন হুসেইন ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে ইপিএস-কে অন্তর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে দেন।
এরপরই অনুষ্ঠান বাড়ির বাইরে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয় ইপিএস এবং ওপিএস গোষ্ঠীর। ভিতরে আটকে পড়েন নেতারা। দেখা যায় দুই পক্ষের সমর্থকেরা হাতাহাতির পাশাপাশি চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি করছে।
বিতর্ক, গোলমালের পিছনে রয়েছে দলের ক্ষমতা দখল। এআইএডিএমকে আমৃত্যু সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা।
১৯৮৭ তে দলের প্রতিষ্ঠাতা এমজি রামচন্দ্রনের মৃত্যুর পর জয়ললিতার নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি।
লক্ষণীয় হল, জয়ললিতার জীবিতাবস্থায় যে কোনও রাজনৈতিক সংকটে দল ও সরকার পরিচালনা করতেন ওপিএস।
দুর্নীতির মামলায় দুবার জেলে যান নেত্রী। দু’বারই ওপিএসের হাতে ক্ষমতা সঁপে গিয়েছিলেন।
কিন্তু নেত্রীর মৃত্যুর পর ওপিএসের রাশ ঢিলে হয়ে থাকে। অনেকেই মনে করেন, জয়ললিতার ছায়া সঙ্গী থেকে রাজনীতি করাই কাল হল ওপিএসের।