৮৪-র দাঙ্গায় হত্যা মামলায় জগদীশ টাইটলারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
SNS
১৯৮৪ সালের দাঙ্গায় শিখ সম্প্রদায়ের তিনজনকে হত্যার মামলায় কংগ্রেস নেতা জগদীশ টাইটলারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল আদালত। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি হত্যার পরবর্তী ওই দাঙ্গায় টাইটলার খুন-সহ গুরুদ্বার ধ্বংস করা , সম্পদ লুঠের জন্য বিক্ষোভকারীদের প্ররোচিত করার মতো একাধিক অপরাধে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে চার্জশিটে জানিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তারই ভিত্তিতে এই চার্জ গঠন। ওই বছর শিখ দাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে অনেকেই মূল খলনায়ক হিসাবে জগদীশ টাইটলারকেই দায়ী করেন। যদিও কংগ্রেস নেতা আদালতে দাবি করেন, তিনি নিরপরাধ।
নিজেকে নির্দোষ বলে আদালতে শুক্রবার দাবি করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জগদীশ টাইটলার । এর পরেই বিচারক রাকেশ সিয়ল বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’’
গত ৩০ আগস্ট সিবিআই-এর চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিচারক সিয়ল। প্রসঙ্গত, রাজধানীতে ’৮৪ সালে শিখ-বিরোধী হিংসার ঘটনায় তদন্তের পর গত বছরের ২০ মে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। এর পর ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই আদালত টাইটলারের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। সেইমতো গত বছরের ৫ আগস্ট আদালতে হাজির হন টাইটলার। তখন তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করে রাউস অ্যাভিনিউ আদালত।
টাইটলারের বিরুদ্ধ আইনজীবী এইচ এস ফুলকা জানিয়েছেন, আদালতে টাইটলার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। এবার ফের আদালত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখবে। ফুলকা জানান, “প্রায় ৪০ বছর এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে সময় লেগে গেল। এতেই বোঝা যায় কেউ শক্তিশালী হলে বিচারবিভাগকে কতটা প্রভাবিত করা যায়।” আইনজীবীর আশা, দ্রুত মামলার শুনানি শেষ হবে এবং টাইটলার শাস্তি পাবেন।
’৮৪-র হত্যাকাণ্ডে টাইটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর, ঠাকুর সিংহ, বাদল সিংহ এবং গুরুচরণ সিংহের মৃত্যু হয়। পুল বঙ্গাসে একটি গুরুদ্বারে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত টাইটলার। সিবিআইয়ের দাবি, টাইটলার জনতাকে উত্তেজিত করে খুন এবং আগুন লাগানোয় প্ররোচিত করেছিলেন। সেই মামলাতেই গত বছর চার্জশিট দেয় সিবিআই। ১৯৮৪ সালের অক্টোবর মাসে নিজের শিখ দেহরক্ষীদের গুলিতে প্রাণ হারান দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি । আর এই মামলাতেই অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে জগদীশ টাইটলারের নাম।
এরপরই দেশের নানা জায়গায় শিখ-হত্যার ঘটনা ঘটতে শুরু করে। সরকারি হিসাবে এই দাঙ্গায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও বেসরকারি সূত্রে জানা যায়, মৃতের সংখ্যা আট হাজারেরও বেশি। শুধু দিল্লিতেই প্রাণ হারান তিন হাজার মানুষ। ২০০৪ সালে কংগ্রেসের মনমোহন সিংহ সরকার মন্ত্রিসভায় তাঁকে রাখা হলেও বিতর্ক এবং সমালোচনার জেরে টাইটলারকে ইস্তফা দিতে হয়।