রবিবার শেষ হচ্ছে লকডাউনের চতুর্থ দফার মেয়াদ। তার ঠিক আগে শনিবার কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে জানালো একমাত্র কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকছে। কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে থাকা এলাকাগুলি থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা হবে। খুলে দেওয়া হবে সবকিছু, শুধুমাত্র কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউন বহাল থাকবে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের সমস্ত কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউন বহাল থাকবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে কনটেনমেন্ট জোন নির্ধারণ করবে জেলা প্রশাসন। কনটেনমেন্ট জোনের ভিতরে কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। রাজ্যগুলিকে নিজেদের মতো করে কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে থাকা বাফার জোন ঠিক করতে হবে। ওই জোনে ঠিক কি কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেই সঙ্গে কি কি নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে তার রূপরেখা ঠিক করবে রাজ্য।
রাজ্যগুলি পরিস্থিতি বিবেচনা করে কনটেনমেন্ট জোনের বাইরের এলাকাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। সেই সঙ্গে আন্তঃরাজ্য পণ্য পরিবহন এবং রাজ্যের ভিতরে মানুষজনের যাতায়াতের ওপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হল। এই ধরনের যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের অনুমতির বা ই-পাসের প্রয়োজন আর পড়বে না। তবে যদি রাজ্য মনে করে সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধির কথা মাথায় রেখে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয় তা বিবেচনা করা হবে।
আগামী জুনের ১ তারিখ থেকে নাইট কার্ফুর সময়সীমা কমিয়ে আট ঘন্টা করা হচ্ছে গোটা দেশ জুড়ে। রাত ৯ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বেরোনোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশিকা জারি করার কথা বলেছে কেন্দ্র।
আগামী ৮ জুন থেকে বেসরকারি অফিস, ধর্মীয় স্থান, হোটেল রেস্তোরাঁ, শপিং মল সব কিছুই খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশিকায়। তবে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে কঠোর ভাবে। দ্বিতীয় ধাপে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার সহ অন্যান্য সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খাোলার ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জুলাই মাস থেকে এই সব প্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারে।
তবে দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে। এর মধ্যে মেট্রো রেল, আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বিমান, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার হল, সিনেমা হল, জিম, অডিটোরিয়াম, সুইমিং পুল সহ সামাজিক, রাজনৈতিক ক্রীড়া বিনোদন ও সাংস্কৃতিক এবং সেই সঙ্গে ধর্মীয় সমস্ত বড় ধরনের অনুষ্ঠান ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে। এগুলির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলা হবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে। এটা হল তৃতীয় ধাপ।
দশ বছরের নিচে এবং পঁয়ষট্টি বছরের ওপরে যাদের বয়স তাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোনোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে। কো মর্বিডিটি রয়েছে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম বহাল থাকছে। সংক্রমণের ঝুঁকি আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে আরোগ্য সেতু সক্ষম এমনটাও বলা হয়েছে। কর্মস্থানে সকল কর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকা বাধ্যতামূলক এমনটাও বলা হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশে।
- প্রথম পর্যায় কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে ৮ জুন থেকে খোলা যাবে ধর্মীয় স্থান, বেসরকারি অফিস, শপিং মল, হোটেল-রেস্তোরাঁ। সামাজিকভাবে দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে কঠোরভাবে।
- দ্বিতীয় পর্যায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার খোলা যাবে। রাজ্য সরকারকে এব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জুলাই মাসে এইসব প্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারে।
- তৃতীয় পর্যায় দেশজুড়ে কয়েকটি বিষয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আপাতত বহাল থাকছে। এর মধ্যে মেট্রো রেল, আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বিমান, বিনদন পার্ক, সিনেমা হল, থিয়েটার হল, বার, জিম, সুইমিং পুল সহ সামাজিক রাজনৈতিক-ক্রীড়া-বিনোদন-সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সব ধরনের বড় অনুষ্ঠান ও জমায়েত। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এগুলি খোলার দিন ঘোষণা করা হবে। ১ জুন থেকে নাইট কার্ফু শুরু হবে। রাত ৯ টা থেকে রোর ৫ টা পর্যন্ত নাইট কার্ফু চলবে। রাজ্য চাইলে আন্তঃজেলা এবং আন্তঃরাজ্য যাতায়াতে কোনও বাধা থাকবে না।