উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলাদের স্থানীয় কমিশন নিয়ে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে কেন্দ্র 

দিল্লি, ২০ ফেব্রুয়ারি – উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলা আধিকারিকদের স্থায়ী কমিশন না দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। শুধু মুখে নারীশক্তির কথা না বলে, তা কাজে করে দেখানোর পরামর্শ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলাদের সঙ্গে যাতে নিরপেক্ষ আচরণ করা হয়, সে ব্যাপারে নীতি নির্ধারণের জন্যও কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলা আধিকারিকদের স্থায়ী কমিশন না দেওয়ার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়। দায়ের করা পিটিশনে আবেদনকারী প্রিয়াঙ্কা ত্যাগী জানিয়েছেন, শর্ট সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে উপকূলরক্ষী বাহিনীতে যে সমস্ত মহিলা আধিকারিক নিযুক্ত হবেন, তাঁদেরও স্থায়ী কমিশন দিতে হবে।

সোমবার  প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। সওয়াল-জবাব শেষে কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেন প্রধান বিচাপতি চন্দ্রচূড়। মহিলা আধিকারিকদের স্থায়ী কমিশনের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কেন কেন্দ্রীয় সরকার পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব নিচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বধীন বেঞ্চ। পাশাপাশি উপকূলরক্ষী বাহিনীতে কেন মহিলা মুখ কেন্দ্র চাইছে না, তা নিয়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিক্রমজিৎ বন্দ্যেপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান বিচারপতিরা। এরপর কড়া ভাষায় তিন বিচারপতি বেঞ্চ জানায়, কেন্দ্রীয় সরকার নারী শক্তি বলে প্রচার চালাচ্ছে।কিন্তু সরকারের কাজের সঙ্গে প্রচারের অনেক ফারাক রয়েছে বলে মনে করছেন বেঞ্চের বিচারপতিরা।

 
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, নারী শক্তির সফল রূপায়নে নজর দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে পুরুষদের মতো স্থায়ী কমিশনে মহিলাদেরও যাতে সমাধান অধিকার দেওয়া হয়, সেদিকে নজর রাখার জন্য কেন্দ্রকে পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রয়োজনে এরজন্য নির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের উপর জোর দিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
 
প্রসঙ্গত, নির্বাচনে মহিলাদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মহিলা সংরক্ষণ বিল আইনে পরিণত করেছিল মোদি সরকার। এর আগে তিন বাহিনী থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী শক্তি বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগে উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশন নিয়ে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় বিজেপির উপর বাড়তি চাপ বলে মনে করা হচ্ছে ।