• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

দেড়শো বছরে বিরল, থমকে গেল জনগণনা, দশ কোটি গরীব খাবার পাওয়া থেকে বঞ্চিত

দিল্লি, ২৫ জুলাই–  প্রতি দশ বছর অন্তর হওয়ার কথা থাকলেও থেমেছে সেই ২০১১ সালে৷ এই ১৪ বছরে দেশের জনগণনার কাজ করে উঠতে পারেনি বিজেপি সরকার৷ অথচ রেওয়াজ হল প্রতি ১০ বছর অন্তর জনগণনার কাজ হওয়া৷ ২০২৪ লোকসভা ভোটের পরে এই কাজ হওয়ার কথা থাকলেও সম্ভাবনা খুব কম বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷ ভারতে জনগণনার কাজ আটকে

population

দিল্লি, ২৫ জুলাই–  প্রতি দশ বছর অন্তর হওয়ার কথা থাকলেও থেমেছে সেই ২০১১ সালে৷ এই ১৪ বছরে দেশের জনগণনার কাজ করে উঠতে পারেনি বিজেপি সরকার৷ অথচ রেওয়াজ হল প্রতি ১০ বছর অন্তর জনগণনার কাজ হওয়া৷ ২০২৪ লোকসভা ভোটের পরে এই কাজ হওয়ার কথা থাকলেও সম্ভাবনা খুব কম বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷
ভারতে জনগণনার কাজ আটকে যাওয়ার ইতিহাস বিরল৷ শুরু ১৮৮১ সালে৷ তারপর থেকে নিয়ম করে প্রতি দশ বছর অন্তর জনগণনা হয়েছে৷ অন্তত ১৫০ বছরের ইতিহাসে কখনও জনগণনা বন্ধ থাকেনি৷ এই প্রথম তা প্রায় অর্ধদশক পিছিয়ে গেল৷ অনেকে আঙুল তুলছেন, সিএএ, এনআরসি, এনপিআর বিতর্কেই জনগণনা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত সতর্ক হতে চাইছে মোদি সরকার৷ জনগণনার আগে ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টারের কাজ সেরে ফেলতে হবে৷ কিন্ত্ত ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ নিয়ে সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে৷ এনপিআরের কাজ থমকে যায়৷
অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ একটি সর্বভারতীয় ওয়েব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘২০১১ জনগণনা অনুসারে, ভারতের জনসংখ্যা ১২১ কোটি৷ যার মধ্যে ৮০ কোটি মানুষ খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় খাদ্য পায়৷ কিন্ত্ত এখন যা মনে হচ্ছে, জনসংখ্যা প্রায় ১৩৭ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে৷ তার মানে প্রায় দশ কোটি গরীব মানুষ কিন্ত্ত এই আইনের আওতায় খাবার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷’
তবে জনগণনার কাজের পেছনে অর্থের বরাদ্দ কিন্তু প্রতি অর্থবর্ষেই হচ্ছে৷ এই যেমন চলতি অর্থবর্ষে জনগণনার জন্য ১২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ যা আগেরবারের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম৷ ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এর তিনগুণের বেশি অর্থ বরাদ্দ ছিল৷ সেই বছর কোভিডের জন্য শেষ অবধি জনগণনার কাজে আর হাত দিতে পারেনি কেন্দ্র৷ বস্তুত, কোভিড পরবর্তী বছরগুলোতে টাকা বরাদ্দ হলেও ক্রমশই কমে এসেছে খরচ৷
তবে এই জনগণনা না হওয়ায় যে ‘নীতিনির্ধানের’ কাজে ব্যাঘাত হচ্ছে তা মনে করিয়ে অর্থবিষয়ক সচিব অজয় শেঠ বলেছেন, ‘নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে জনগণনা অত্যন্ত জরুরি৷ যখনই এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেটা জনসমক্ষেই নেওয়া হবে এবং তার জন্য দরকারি অর্থও বরাদ্দ করা হবে৷ আপনাদের ব্যাপারটা বুঝতে হবে৷ আমরা খরচ অনুমান করে তো বাজেটে বরাদ্দ করি না৷ যে ডিপার্টমেন্ট কোনও কাজ করতে চায়, তারা সেটা জানায় এবং সেইমত বরাদ্দ করা হয়৷’
কিন্ত্ত খরচ ও বরাদ্দের দোহাই দিয়ে যে জনগণনার কাজ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না তা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ ২০২৫-১৬ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষ অবধি বাজেটে জনগণনার জন্য যত বরাদ্দ করা হত, খরচ আদতে হত তার চেয়েও বেশি৷ কিন্ত্ত ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে বরাদ্দ বাড়লেও খরচ ক্রমশ কমে এসেছে৷ বাজেটে বা অর্থসমীক্ষা কোনওটাতেই জনগণনার নামগন্ধও করেনি মোদি সরকার৷ যার ফলে এখনও গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণের কাজ ২০১১ জনগণনার ভিত্তিতেই হয়ে চলেছে৷ এদিকে পরিসংখ্যান নিয়ে নির্মলা সীতারমন একাধিক সংস্কারের রাস্তা নিয়েছেন৷ তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে জোর দেওয়া হয়েছে৷ কিন্ত্ত জনগণনার কথা তোলা হয়নি৷ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এর পিছনে নিশ্চিতভাবেই রাজনীতি রয়েছে৷