নিজস্ব প্রতিনিধি – দেশের শীর্ষ আদালতে চাঞ্চল্যকর আবেদন করেছে সিবিআই। সপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল দশদিনের মধ্যে জানাতে হবে রাজীব কুমারকে নিয়ে সিবিআইয়ের অবস্থান কি? দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে অবশেষে সিবিআই রাজীব কুমারকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আগামী সােমবার এই মামলার শুনানি রয়েছে। মূল মামলার সঙ্গে এই আবেদনের শুনানি হতে পারে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সিবিআই সর্বোচ্চ আদালতে বলেছে, শিলংয়ে জেরার সময় রাজীব কুমার সিবিআইকে সহযােগিতা করেননি। তাঁর বয়ানে অসংখ্য অসংগতি পাওয়া গিয়েছে। তাই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা দরকার। ইতিমধ্যে শিলং জেরার রিপাের্ট, ভিডিও সবই শীর্ষ আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই। এই খবর প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশের শীর্ষ আদালত যদি রাজীব কুমারকে হেফাজতের নির্দেশ দেয়, সেক্ষেত্রে এই চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে নতুন কার কার নাম উঠে আসে তা নিয়ে ফের জল্পনা তৈরি হবে।
উল্লেখ্য, শিলংয়ে রাজীব কুমারকে টানা জেরা করার পর মুখবন্ধ খামে সুপ্রিম কোর্টে ‘স্ট্যাটাস রিপাের্ট দিয়েছিল সিবিআই। সেই রিপাের্ট পড়ে সুপ্রিম কোর্টের ভরা এজলাসে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছিলেন, ‘আপনারা যা বলছেন তা খুবই গুরুতর বিষয়। এরপর তাে চোখ বন্ধ করে থাকা যায় না’। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ সেদিন সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল তারা যে রিপাের্ট মুখবন্ধ খামে দিয়েছিল সেটা যেন দশদিনের মধ্যে হলফনামা হিসেবে পেশ করে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সঙ্গে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নিতে চায় তাও যেন জানায়। সেই সঙ্গে ৬ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারকেও বলা হয়, হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে। এখানেই শেষ নয়, এই চিটফান্ড মামলা থেকে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল ও মুখ্যসচিবকে রেহাই দিতেও চাননি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সারদা কাণ্ডের তদন্তে সিট গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। সেই সিট-এর প্রধান ছিলেন রাজীব কুমার। সিবিআইয়ের অভিযােগ ছিল, সিট-এর প্রধান থাকাকালীন সারদা-দুর্নীতির অনেক তথ্য ও প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি সারদা তদন্তে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে তাঁর বাসভবনে পৌঁছায় সিবিআই আধিকারিকদের একটি দল। এরপরই কলকাতা পুলিশ বনাম সিবিআই দ্বন্দ্বে রাজরাজনীতি তোলপাড় হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেট্রো চ্যানেলে ধরনায় বসেন। এরপর জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। আদালত অবমাননার অভিযােগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, রাজীব কুমারকে তদন্তে সহযােগিতা করতে হবে সিবিআইকে। তবে নিরপেক্ষ কোনও স্থানে (শিলং)
রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এও নির্দেশ দেয়, রাজীব কুমারকে কোনওভাবে গ্রেফতার করা যাবে না। জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কি তথ্য উঠে এল তা হলফনামা আকারে দেশের শীর্ষ আদালতে সিবিআইকে পেশ করতে হবে। সেই সিবিআই রিপাের্টের ওপর নির্ভর করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, অভিযােগ গুরুতর।