ঐতিহাসিক অবিচারের সংশোধনে নাগরিকত্ব আইন : মােদি

এনসিসি'র র‍্যালিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। (Photo: IANS)

ঐতিহাসিক ভুলকে শুধরে নেওয়া হল বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী মােদি বলেন, ‘দেশে বিরােধী রাজনৈতিক গুলি নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতা করছে তাই নয়, পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষকে ভুল বােঝাচ্ছে। দশকের পর দশক ধরে চলে আসা ঐতিহাসিক অবিচারের সংশােধন করার লক্ষ্যে সংশােধনী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আসা হয়েছে’।

তাঁর কথায়, ‘শুধু ঐতিহাসিক অবিচারের সংশােধন করা হল তা নয়, প্রতিবেশি দেশগুলাে থেকে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু মানুষগুলােকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হল’।

ন্যাশানাল ক্যাডেট করপ্স-এর প্রােগ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশভাগের সময় অবিচার করা হয়েছিল। তখন যারা স্বাধীন ভারতের শাসনভার সামলাচ্ছিলেন, তাঁরা দেশভাগ মেনে নিয়েছিলেন’। তাঁর কথায়, ‘নেহরু-লিয়াকৎ চুক্তি মােতাবেক দু’দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। গান্ধিজিও সেটা চেয়েছিলেন। ভারত যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করার লক্ষ্যে মােদি প্রশাসন সংশােধিত নাগরিকত্ব বিলটি নিয়ে এসেছে’।


বিরােধীদের একহাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিরােধী দলগুলি ভােটব্যাঙ্ক রাজনীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। এদের মধ্যে কেউ দলিতদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন, তারাই আবার পাকিস্তানে দলিতদের ওপর নৃশংসতার ঘটনাকে অস্বীকার করেন। তারা ভুলে গেছে, ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলােও দলিত। বিরােধী দলগুলি অপপ্রচার চালাচ্ছে যে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পৃথিবীতে আমার জনপ্রিয়তায় প্রভাব পড়বে– গুজবকারীদের বােঝা উচিত আমি আমার জনপ্রিয়তার জন্য কাজ করি না। দেশের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করি’।

নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন নিয়ে ইউরােপীয় ইউনিয়নের তরফে ছটি প্রস্তাব ইউরােপীয় সংসদে পেশ করা হয়। ইউরােপীয় ইউনিয়নের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হওয়ার ফলে পৃথিবী জুড়ে দেশহীন মানুষের সংখ্যা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করবে। ইকনমিস্ট ইন্ট্যালিজেন্স ইউনিটের ডেমােক্র্যাসি ইনডেক্সে ভারতের স্থান দশ নম্বরে নেমে গেছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি বলেন, ‘ভারতের দুনিয়াব্যাপী ভাবমূর্তি ও ভ্রাতৃত্ববােধকে প্রধানমন্ত্রী নষ্ট করে দিয়েছেন। এতদিন পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ও ভ্রাতৃত্ববােধ নিয়ে সমালােচনা করা হত’। সমালােচকরা বলছেন, ‘মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে তা নয়, সংবিধানে উল্লেখিত ধর্মীয় নিরপেক্ষতার ধারাকে লঙঘন করা হচ্ছে’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিন তালাক বন্ধ করে দিয়ে মুসলিম মহিলাদের অধিকারকে রক্ষা করা হয়েছে। প্রতিটি ভারতীয় আমাদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান– এই চিন্তাধারা নিয়ে এগিয়ে যাব।