একের পর এক দুর্ঘটনা। একের পর এক মৃত্যু। আজ ভোররাত থেকেই যেন শুরু হয়েছে মৃত্যুমিছিল। উত্তরপ্রদেশের পর এবার মধ্যপ্রদেশ। ফের ঘরফিরতি শ্রমিক’দের মৃত্যুর সাক্ষী হল দেশ। গতকাল রাতেই মুজফফরপুরে ছয় ঘর ফিরতি শ্রমিক’কে হাইওয়ের উপরে পিষে দিয়ে গেছে সরকারি বাস।
আজ ভোররাতে মধ্যপ্রদেশের গুনা বাইপাস রোডে ফের এক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল আট শ্রমিকের। গুরুতর জখম আরও ৫৪ জন। মহারাষ্ট্র থেকে অভিবাসী শ্রমিক’দের নিয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে রওনা হয়েছিল ওই ট্রাক। ছিলেন ৭০ জন শ্রমিক।
মধ্যপ্রদেশের গুনা বাইপাস রোডের উপরে ট্রাকটির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে একটি বাসের। ভেঙে দুমড়ে যায় ট্রাকের সামনের অংশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আটজনের। গুরুতর জখম অবস্থায় ৫৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। অনেকের অবস্থাই সংকটজনক। বেঁচে ফেরারা বলেছেন, রাত তখন ৩’টা।
গুনা রোডের উপরে দুরন্ত গতিতে চলছিল ট্রাক। আচমকাই ট্রাকের মুখোমুখি চলে আসে একটি বাস। নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি ট্রাকচালক। মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি গুনা থেকে আহমেদাবাদের দিকে যাচ্ছিল। কোনও যাত্রী ছিল না। চালক ও খালাসিও ছিলেন বাসে। সূত্রের খবর, ট্রাকের মধ্যে মহিলা ও শিশুরাও ছিল। তাদের অনেককেই গুনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই পায়ে হেঁটেই বাড়ির পথ ধরেছেন বিভিন্ন রাজ্যের শ্রমিকরা। একাধিক দুর্ঘটনাও ঘটেছে এই সময়ে। কিন্তু তৃতীয় দফার লকডাউনের মধ্যে ভিন রাজ্যে থাকা শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফেরার অনুমতি দিতেই রাস্তায় কার্যত ঢল নেমেছে শ্রমিকদের। ট্রেনে, বাসে ঠাই মিলছে না যাঁদের, তারা হেঁটেই ঘরমুখো হচ্ছেন। কেউ শিশু কোলে, কেউ বৃদ্ধা মা’কে কাঁধে ফেলে আবার কেউ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ছোট ঠেলায় চাপিয়ে ঘরের পথ ধরেছে। এই ঘর ফিরতি পথে দুর্ঘটনাও ঘটে চলেছে একের পর এক।
গতকাল রাতেই মজফফরপুর হাইওয়েতে ৬ শ্রমিককে পিষে দিয়ে গেছে বাস। তার আগে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে ১৭ জন অভিবাসী শ্রমিককে পিষে মেরে ফেলে এক মালগাড়ি। রেলরাইনের উপরে পড়ে থাকা রক্তাক্ত দেহাংশ, ছেড়াফাটা কাপড়ের টুকরো, আর বাসি রুটি দেখে শিউরে ওঠে দেশ।
মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে একটি ট্রাক পিষে দেয় পাঁচ ভিনরাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিককে। ২০ জনের একটি দল হায়দাবাদ থেকে মধ্যপ্রদেশের ঝাঁসি ফিরছিলেন। গভীর রাতে পণ্যবাহী ট্রাক রাস্তার ধারে বিশ্রামরত শ্রমিকদের উপর দিয়ে চলে যায়।